কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

সৌদি আরবের পর্যটন দূত হলেন মেসি

জেদ্দা বিমানবন্দরে অবতরণের পর দেয়া হয় রাজকীয় সংবর্ধনা। এরপর সাতবারের বর্ষসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসিকে পর্যটন দূত হিসেবে ঘোষণা করেছে সৌদি আরব। মঙ্গলবার (১০ মে) দেশটির পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতেব এ ঘোষণা দেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে তাকে দূত হওয়ার আহবান জানায় দেশটি। সে সময় সৌদি রাজতন্ত্রের শাসনে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হওয়া অনেকেই মানবাধিকার সংস্থা গ্র্যান্ট লিবার্টির মাধ্যমে মেসির কাছে পাঠানো চিঠিতে তাঁকে এসব বিষয়ে জড়াতে নিষেধ করেছিলেন।

 

গতকাল ইনস্টাগ্রামে সৌদি আরবের তীরঘেঁষা লোহিত সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করার ছবি দেন মেসি। তখন অনেকে ভেবেছিলেন, পিএসজি তারকা হয়তো সৌদি আরবে ছুটি কাটাতে গেছেন। তবে ‘রথ দেখার সঙ্গে কলা বেচা’র কাজও সেরেছেন তিনি। পিএসজি ও আর্জেন্টিনার সতীর্থ লিয়ান্দ্রো পারেদেস ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছেন মেসি।

দেশটির পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতেব টুইটারে মেসিকে পর্যটনের দূত বানানোর ঘোষণাটা দেন আরবি ভাষায়, ‘লিওনেল মেসি ও তাঁর বন্ধুদের সৌদি আরবে স্বাগত জানাই। আপনাকে নিয়ে লোহিত সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ ও আমাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস জানাতে আর তর সইছে না। সৌদিতে এটাই মেসির প্রথম ভ্রমণ নয়, শেষবারও নয়। আনন্দের সঙ্গে আমি মেসিকে সৌদি পর্যটনের দূত ঘোষণা করছি।’

 

তবে মেসির ক্লাব পিএসজির মালিক প্রতিষ্ঠান কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টের (কিউএসআই) প্রশাসনিক প্রধান দেশটির আমির তামিম বিন হামাদ আল থানি। নাসের আল খেলাইফি কিউএসআইয়ের চেয়ারম্যান হলেও কাতারের আমিরের কথাই নাকি সংস্থাটির শেষ কথা। সৌদি আরবের সঙ্গে বহু বছর ধরেই কূটনৈতিকভাবে বাজে সম্পর্ক ছিল কাতারের। তাই মেসির সৌদি আরবের পর্যটন দূত হওয়া পিএসজি কোন চোখে দেখবে, তা ভাবার বিষয়।

তবে সৌদি আরবের খেলাধুলার অঙ্গনে মেসির এই পর্যটন দূত হওয়া অনেকেই সাদরে গ্রহণ করেছেন। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্ব করা এবং আল-হিলালের সাবেক ফরোয়ার্ড সামি আল-জাবের টুইট করেন, ‘সৌদি আরব পর্যটনের দূত হিসেবে মেসিকে পাওয়াটা দারুণ পদক্ষেপ।’

 

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানিয়েছিল, সৌদি পর্যটন বোর্ডের তরফ থেকে মেসিকে দূত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সে সময় এসব বিষয়ে না জড়াতে মেসির কাছে মানবাধিকার সংস্থা গ্র্যান্ট লিবার্টি।

সেই চিঠিতে মেসিকে বলা হয়েছিল, ‘আপনি লাখো মানুষের প্রেরণা, আপনার কথা ও কাজ অনেকের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ…সৌদি প্রশাসন নিজেদের সুনামের জন্য আপনাকে ব্যবহার করতে চায়। সৌদি আরবে গ্রেপ্তার হওয়া বন্দীরা অত্যাচারিত এবং মাসের পর মাস ধরে তাদের আটক রাখা হচ্ছে। সৌদি শাসকদের বিপক্ষে কোনো কথা বললেই দীর্ঘমেয়াদি বন্দিত্ব মেনে নিতে হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়। আপনি (মেসি) যদি সৌদি আরবে যেতে সম্মত হন, তাহলে আধুনিক সৌদি আরবে যে ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেসবের প্রতিও সম্মতি দিলেন। কিন্তু না করে দিলে সবাই মিলে একটি বার্তা পাবে—মানবাধিকার গুরুত্বপূর্ণ।’

পাঠকের মতামত: