কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

হেলপ কক্সবাজার ও জেনাসের যৌথ উদ্যোগে ‘মানবিক বিপর্যয় প্রেক্ষাপটে সামাজিক সম্প্রীতি’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি::

কক্সবাজারের বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা হেলপ কক্সবাজার ও জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ‘মানবিক বিপর্যয় প্রেক্ষাপটে সামাজিক সম্প্রীতি’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১৯ ডিসেম্বর শনিবার হোটেল বেস্ট ওয়েস্টার্নে অনুষ্ঠিত সেমিনারে উদ্ভোধন ও শুভেচ্ছা বক্তব্যে জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শিউলি শর্মা বলেন, স্থানীয় সংস্থা হিসেবে আমরা সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি। রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝে সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে করণীয় নির্ধারণের জন্য সামাজিক সম্প্রীতি শীর্ষক স্টাডি করা হয়েছে। স্টাডিতে উঠে আসা বিষয়গুলো অনুসরণ করে আমরা কাজ চালিয়ে যাবো।

সেমিনারের প্রধান অতিথি উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের কার্যকলাপের কারণে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার পথে। হেলপ কক্সবাজার ও জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থার তাদের স্টাডিতে সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধির জন্য বাস্তবসম্মত কারণ গুলো তুলে এনেছেন। স্টাডির সুপারিশ গুলো অনুসরণ করে বেসরকারী সংস্থা ও অনান্য সংস্থা কাজ করলে সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখা সম্ভব বলে মনে করি।

বিশেষ অতিথি উখিয়া উপজেলা ভাইস পরিষদ চেয়ারম্যান এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উখিয়ার জনগণ সামাজিক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। আমরা উখিয়াবাসী উদার বলেই আমরাই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। স্থানীয় বেসরকারী সংস্থা গুলোই জানে উখিয়ার মানুষের কি প্রয়োজন, কোথায় ঘাটতি রয়েছে। স্থানীয় সংস্থা গুলো সমন্বয় করে কাজ করে পারবে উখিয়ার সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে।

বিশেষ অতিথি উখিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সাঈদ মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, কিছু এনজিও বিতর্কিত প্রকল্প হাতে নিয়ে স্থানীয়দের নায্য অধিকার বঞ্চিত করে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের সাথে সমন্বয় ছাড়াই কাজ করছেই বলেই সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়দের সাথে সমন্বয় ছাড়াই স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা গুলোকে বাদ দিয়ে উখিয়ার সামাজিক সম্প্রীতির কথা চিন্তা করা সম্ভব নয়। ব্র‍্যাকসহ দাতা সংস্থাগুলোকে অনুরোধ করবো স্থানীয় সংস্থাগুলোকে সাথে নিয়ে স্থানীয়দের অধিকার নিশ্চিত করলেই সামাজিক সম্প্রীতির সহাবস্থান সহজ হবে।

বিশেষ অতিথি ব্র‍্যাকের পার্টনারশিপ ম্যানেজার মাজহারুল ইসলাম বলেন, ব্র‍্যাক স্থানীয়করণের লক্ষ্যে কক্সবাজারের স্থানীয় সংস্থার মাধ্যমে কাজ করছে। ব্র‍্যাক বিশ্বাস করে স্থানীয় সংস্থাগুলো শক্তিশালী হলে সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে। কক্সবাজারেই স্থানীয়ভাবে যুগযুগ সহাবস্থানে থেকে ও সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন ঘটনা রামুতে ঘটেছে। ব্র‍্যাক সেই সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা ও সহাবস্থান বজায় রাখতে করণীয় কাজ গুলো তুলে আনতেই এই ওয়ার্কশপ।
সমাপনী বক্তব্যে হেলপ কক্সবাজার নির্বাহী পরিচালক আবুল কাসেম সকলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, কক্সবাজারে স্থানীয় সংস্থা হিসেবেই রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পূর্ব থেকে হেলপ কক্সবাজার কাজ করে আসছে। সরকারের সহযোগী সংস্থা হিসেবে আমরা উখিয়ার সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা ও আরো অধিকতর বেগবান করতে কাজ করবো।
সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শহিদুল্লাহ , জেলা মহিলা বিষয়ক উপ-অধিদপ্তরের পরিচালক সুব্রত বিশ্বাস, উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পলাশ বড়ুয়া ও রামু প্রেসক্লাব সভাপতি নুরুল ইসলাম সেলিম।

সেমিনারে ‘স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের সামাজিক সম্প্রীতি’ বিষয়ক স্টাডি উপস্থাপন করেন হেলপ কক্সবাজারের কহিনুর মার্কার, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থার আশীষ বনিক।
এইছাড়াও সেমিনারে আরো অংশগ্রহণ করেন, হেলপ কক্সবাজারের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ম্যানেজার এস এম জুনাইদ চৌধুরী, প্রজেক্ট অফিসার জিল্লুর রহমান, অপারেশন অফিসার মোঃ ইউছুপ, এডমিন এন্ড এইচ আর মাহমুদুল হাসান তারেক, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থার ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ম্যানেজার নিহার রঞ্জন রায়, প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ আব্দুল আজিজ, প্রোগাম অফিসার রবি হাসান, ফাইন্যান্স অফিসার রুপু দত্ত, এডমিন অফিসার অলি উল্লাহসহ জালিয়াপালং ও হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ইউপি সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মকর্তাবৃন্দ।

উল্লেখ্য, ব্র‍্যাকের সহায়তায় ডিফাটের অর্থায়নে হেলপ কক্সবাজার উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নে ও জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নে ‘স্থানীয়দের জন্য মানবিক সহায়তা প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করছে।

পাঠকের মতামত: