কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

৩০০ টাকা মজুরী দিবে নইলে বুকে গুলি মারবে

৩০০ টাকা মজুরী দাবিতে ১৭তম দিনে মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানসহ দেশের ১৬৭টি চা বাগানের শ্রমিকরা আজও অনড় রয়েছেন। সকাল থেকে কাজে যোগ দেননি শ্রমিকরা। সাধারণ চা শ্রমিকরা প্রধান মন্ত্রীর কাছ থেকে সরাসরি ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছেন। না হলে তাদের রুটি রুজির লাগাতার ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।

৩০০ টাকা মজুরী দাবিতে দেওরাছড়া চা বাগান, প্রেমনগর চা বাগান, মৌলভী চা বাগান, মাজদিহি চা বাগান ও হামিদিয়া চা বাগানের কয়েক হাজার শ্রমিক একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মৌলভীবাজার জেলা সদরের আসেন। তারা মৌলভীবাজার শহরের ঢাকা-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের বেরীর পাড় মোড়ে রাস্তায় বসে শ্রমিকরা বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বিক্ষোভ পালন শুরু করেন। এছাড়াও মজুরী আদায়ে জেলার ৯২টি বাগানে কাজে না গিয়ে বাগানের ভেতর বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভ আন্দোলন করে সিলেট ও হবিগঞ্জে শ্রমিকরা।

পরে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বেরীর পাড় এলাকায় শ্রমিকদের মজুরীর বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে বলেন, শ্রমিকদের ভেতর কিছু বাহিরের লোক প্রবেশ করে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। প্রধানমন্ত্রী খুব দ্রুত শ্রমিকদের মজুরীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। এর কিছু পরে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে বিকেল ৫টায় মিছিল সহকারে শাহ্ মোস্তফা সড়ক হয়ে বাগানে চলে যায়।

কয়েকটি বৈঠকের পর চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দরা চলমান মজুরী আন্দোলনের বিষয়ে শ্রমিকদের কাঙ্খিত দাবি আদায় করতে না পারায় এখন তাদের উপর ক্ষোভ সাধারণ শ্রমিকরা। তারা বলছে রুটি রোজির আন্দোলন আমরাই চালিয়ে যাবো। নেতারা আমাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর দোহাই দিয়ে বার বার প্রতারণা করেছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে আমাদের মজুরীর বিষয়ে সরাসরি কিছু শুনতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা পেলেই আমরা কাজে যোগ দেব।

শ্রমিকরা আরো বলেন, ১২০ টাকা দিয়ে এখন আর সংসার চলে না। তাই আমরা নিজেকে বাঁচাতে নিজেদের সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচাতে কাজ ছেড়ে রাস্তায় নেমেছি। না খেয়ে দাবি আদায়ের আন্দোলনে নেমেছি। দাবি আদায় না হলে আমরা রাস্তায়ই মরব।

সাধারণ শ্রমিক রনি আহমদ, সুবোদ কুর্মী, জিমা উরাং, অমিতা রায় জানান, ধুকে ধুকে না খেয়ে আর মরতে চাইনা। এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে ৩০০ টাকা মজুরী দিবে নইলে বুকে গুলি মারবে। না হলে আমাদের চারিদিকে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে একেবারে মেরে ফেল।

এদিকে শ্রমিকরা যাতে কাজে যোগ দেন এ লক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ বিভিন্ন বাগানে গিয়ে পাঞ্চায়েত কমিটির সাথে বৈঠক করে কাজে যোগদানের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন।

উল্লেখ্য গত ৯ আগস্ট থেকে শ্রমিকরা ৩০০ টাকা মজুরীর দাবিতে ধর্মঘটে নামেন। ২ দফা মজুরী বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করা হলে তা শ্রমিকরা প্রত্যাখ্যান করেন। দাবি না মানায় চা শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করে যাচ্ছেন।

পাঠকের মতামত: