কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

৬৪ জেলায় টিকা পৌঁছে গেছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্যে দেশের ৬৪ জেলায় টিকা পৌঁছে গেছে।

মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক এ তথ্য জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে ৫শ’র বেশি মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছে। তারা সবাই ভালো আছেন। ইতোমধ্যে দেশের সব জেলায় ভ্যাকসিন পৌঁছে গেছে। উপজেলায়ও পৌঁছে যাবে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হবে।’

করোনার টিকা নিতে জনসাধারণকে উৎসাহিত করতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।

ডা. জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রী, এমপি, সচিব মহোদয়কে আহ্বান করবো, তারাও ভ্যাকসিন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে।’

আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে একযোগে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। ওইদিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারাও টিকা নেবেন। একইসময়ে সারা দেশে টিকা কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় আপাতত ৪৩টি স্থানে করোনার টিকা দেয়া হবে। সেখানে ৩৫৪টি টিম কাজ করবে। সংখ্যাটা কম-বেশি হতে পারে। আর সব মিলিয়ে সারা দেশে ৬ হাজার ৬৯০টি টিম কাজ করবে। কিন্তু এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেয়া হবে না। ইউনিয়ন পর্যায়ে অন্তত ৪ হাজার ৬০০টি টিকা কেন্দ্র হবে।

গত বুধবার (২৭ জানুয়ারি) কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সকে করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বহুল প্রতীক্ষিত টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং প্রথম ৫ জনকে টিকা দেয়া দেখেন। সব মিলিয়ে উদ্বোধনী দিনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৬ জনকে টিকা দেয়া হয়।

পরদিন ২৮ জানুয়ারি ঢাকার ৫টি হাসপাতালে একদিনে ৫৪১ জনকে করোনা ভ্যাকসিন দেয়া হয়। ওইদিন সকাল ৯টা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ৪টি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ৪টি, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪টি, কুর্মিটোলনা জেনারেল হাসপাতালে ৪টি ও কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে একটি বুথে করোনার টিকা দেয়া হয়।

ওইদিনই বিএসএমএমইউ বুথে প্রথম টিকা নেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। একইসময়ে দেশের প্রথম সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে টিকা নেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ওইদিন একই বুথে টিকা নেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান। আর সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ সেদিন ঢামেক হাসপাতালের বুথে টিকা নেন।

বাংলাদেশে যেহেতু করোনা টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি, তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী প্রথম দফায় ঢাকার উল্লিখিত ৫টি হাসপাতালে নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যক্তির ওপর এ টিকা প্রয়োগ করার পর তাদের এখন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

গত ২১ জানুয়ারি উপহার হিসেবে ভারতের পাঠানো করোনা ভাইরাসের ২০ লাখ ডোজ টিকা দেশে পৌঁছে। এর ৪ দিন পর গত সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ভারতের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিশেষ ফ্লাইটে এসেছে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি আরও ৫০ লাখ টিকা। টিকাটির নাম দেয়া হয়েছে ‘কোভিশিল্ড’।

গেল ৫ নভেম্বর ‘কোভিশিল্ড’ নামের ওই টিকার ৩ কোটি ডোজ কিনতে সেরামের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। গত ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর এ টিকা আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।

করোনা ভ্যাকসিন ক্রয় চুক্তির ধারা অনুযায়ী, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ৬ মাসে বাংলাদেশকে ৩ কোটি টিকা দেয়ার কথা রয়েছে। প্রতিমাসে টিকা আসবে ৫০ লাখ করে। বাংলাদেশ সরকার জনগণকে বিনামূল্যে এ টিকা দেয়ার ঘোষণা আরও আগেই দিয়ে রেখেছে।

পাঠকের মতামত: