কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারে কিশোরীকে আটকে রেখে দেড় মাস ধরে ধর্ষণ, আটক ৪

কক্সবাজারের সদর উপজেলার পিএমখালী ও বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে এক ধর্ষক ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম র‌্যাব-৭ সদস্যরা। আটককৃতদের কক্সবাজার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আর ভুক্তভোগী কিশোরীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুনিরুল গিয়াস।

আটককৃতরা হলো খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়ার আবদুল গণির পুত্র ধর্ষক শাহাব উদ্দীন এবং তার সহযোগী পেকুয়া উজানটিয়ার আরমান হোসেন, খরস্কুল হাটখোলা পাড়ার নুরুল আলম ও পেঁচারঘোনার লোকমান।

কন্যাকে দেড় মাস ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে গত ১১ অক্টোবর ৯৯৯-এ কল করে সহায়তা চান কিশোরীর মা। ৩৫ হাজার টাকা ধার দেওয়ার পর যথাসময়ে ফেরত না পাওয়ায় টাকার পরিবর্তে টমটম চালকের মেয়েকে জোর পূর্বক আটকে রেখে ধর্ষণ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ করেন ভিকটিমের মা। কক্সবাজার মডেল থানার পুলিশ সেদিন দুপুরে কিশোরীকে উদ্ধারে অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে মাঠে নামে র‌্যাব।

ভিকটিমের মা জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী পশ্চিম জুমছড়ির টমটম চালক মাহবুব আলমের সঙ্গে খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়ার আব্দুল গণির পুত্র শাহাবুদ্দিনের টমটম চালাতে গিয়ে সম্পর্ক হয়। সেই সুবাদে শাহাবুদ্দিন মাহবুব আলমের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতো। এরইমধ্যে মাহবুব আলমের টাকার প্রয়োজন পড়ায় শাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ধার নেয়। টানাপোড়েনের কারণে মাহবুব ৩৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এই সুযোগে শাহাবুদ্দিন মাহবুব আলমের কিশোরী কন্যাকে জোরপূর্বক লোকজন দিয়ে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। টাকা ফেরত না দিলে মেয়েকে আর ফেরত দেবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেয় শাহাবুদ্দিন।

মাহবুব আলমের স্ত্রী শামসুন্নাহার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য স্থানীয় মেম্বার ও খরুলিয়ার মেম্বার আবদুর রশীদের কাছে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেন। তাতেও কোনও কাজ হয়নি। পরে সরকারি সহায়তা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে আকুতি জানান। বিষয়টি কক্সবাজার মডেল থানাকে অবগত করা হলে কক্সবাজার মডেল থানা এস আই মনসুরের নেতৃত্বে ১১ অক্টোবর খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়ায় টমটম চালক শাহাবুদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের খবর আগে থেকে জেনে যাওয়ায় শাহাবুদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন মেয়েটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে চট্টগ্রামের র‌্যাব-৭ এর একটি দল ১৫ অক্টোবর অভিযান চালিয়ে ধর্ষক ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করে।

তাদেরকে বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। সদর থানার ওসি জানান, আটককৃতদের শুক্রবার সকালে আদালতে সোপর্দ করার পর জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিকটিমের মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

খরুলিয়ার মেম্বার আব্দুর রশিদ জানান, টমটম চালক শাহাবুদ্দিন ইতিপূর্বেও নারী সংক্রান্ত ঘটনা করেছে।

পাঠকের মতামত: