কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

তালেবানবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল আফগানিস্তান

ক্ষমতা নিতে না নিতেই তালেবানবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল আফগানিস্তান। বিক্ষোভে তালেবানের গুলিতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। নতুন আফগানিস্তান গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হবে না বলে সাফ জানিয়েছে তালেবান।
তালেবানবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল আফগানিস্তান

এদিকে ফ্লাইট না থাকলেও তালেবানের হাত থেকে বাঁচতে এখনো বিমানবন্দরে ভিড় করছেন সাধারণ আফগানরা। আফগানিস্তান থেকে পালানো প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

অন্যদিকে তুমুল সমালোচনার মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে সব মার্কিন নাগরিককে না ফেরানো পর্যন্ত দেশটিতে সেনা মোতায়েন থাকবে।

কাবুলের নিকটবর্তী শহর জালালাবাদে শরিয়াহ শাসনবিরোধী বিক্ষোভে এভাবেই মুহুর্মুহু গুলি চালায় সদ্য ক্ষমতা নেওয়া তালেবানের সদস্যরা। শুরু হয় দিগ্বিদিক ছোটাছুটি। সরকারি বাহিনীর জায়গায় সড়কে এখন রাজত্ব করছে তালেবান। অস্ত্র হাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। এরই মধ্যে ইসলামিক আইন বা শরিয়াহভিত্তিক শাসনের ঘোষণা দিয়েছে তালেবান।

এবার গোষ্ঠীটির শীর্ষ এক নেতা জানিয়েছেন, আফগানিস্তান গণতান্ত্রিক কোনো রাষ্ট্র হবে না। গণতান্ত্রিক বা রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থার বিষয়ে কোনো আলোচনাই হবে না বলেও সাফ জানান ওই নেতা। নারীদের কর্মক্ষেত্রে সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হলেও দেশটির টিভি উপস্থাপিকা শাবনাম খান জানিয়েছেন, ইসলামি শাসনের দোহাই দিয়ে তাকে কাজ করতে দিচ্ছে না তালেবান।

তালেবানের হাত থেকে বাঁচতে এখনো বিমানবন্দরে ভিড় করছেন হাজার হাজার আফগান। কোনো ধরনের কাগজপত্র বা ফ্লাইট না থাকলেও দেশত্যাগের জন্য মুখিয়ে আছেন তারা। তবে এখনো নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে ইতালি, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ।

দেশ ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নেওয়া প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি আবারও দাবি করেছেন, রক্তপাত এড়াতেই তিনি দেশ ছেড়েছেন। ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কারণেই তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের শাসনভার।

বিপুলসংখ্যক অর্থ চুরি করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সুস্পষ্ট উত্তর না দিলেও তার দাবি, এক সেট কাপড় ও স্যান্ডেল পায়ে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। শিগগিরই তিনি দেশে ফেরারও আভাস দেন।

আশরাফ গনি বলেন, দেশ থেকে পালানোর কোনো ইচ্ছে আমার ছিল না। আফগানিস্তানের মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে ও সত্যিকারের ইসলামিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় দেশে ফিরতে আমি আলোচনা করছি।

এদিকে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে গেলেও এখনো দেশটিতে প্রায় ১৫ হাজার মার্কিন সেনা নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এ অবস্থায় তুমুল সমালোচনার মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব নাগরিককে নিরাপদে দেশে না ফেরানো পর্যন্ত মার্কিন সেনারা দেশটিতে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবে।

প্রত্যেক মার্কিনকে ফিরিয়ে আনতে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে বলেও জানান তিনি।

আফগানিস্তানের মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। দেশটির বেসামরিক মানুষের মাঝে নির্বিঘ্নে ত্রাণসামগ্রী সরবরাহে কোনো ধরনের বাধা না দেওয়ারও আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

সূত্র: আলজাজিরা, বিবিসি

পাঠকের মতামত: