কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

উখিয়ায় পল্লীবিদ্যুতের ভেল্কিবাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক::
উখিয়ায় কোনোভাবেই থামছে না পল্লী বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি। প্রতিদিন বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ছে অথচ প্রতিযোগিতা করছে লোডশেডিংয়ের। এ যেন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
বিদ্যুতের ভেল্কিবাজিতে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে মানবতার শহর উখিয়া উপজেলার জনজীবন। প্রতিদিনের লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ উপজেলার মানুষের স্বাভাবিক জীবন। লোডশেডিংয়ের নামে প্রতিদিনই চলছে বিদ্যুৎ এর আসা-যাওয়ার খেলা। গতকাল বুধবার সকাল ৭:৩০ থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। ১৮ জানুয়ারি রাত ১১ টা থেকে ২ পর্যন্ত টানা একটানা তিন ঘন্টা বিদ্যুৎ ছিল না। নবাগত ডিজিএম মোহাম্মদ ইব্রাহিম আসার পর পরই শুরু হয়েগেল বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার খেলা। দিনে-রাতে কতবার যে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার খেলায় মেতে থাকে তা ভুক্তভোগীরাই বেশি অনুভব করেন। বিদ্যুৎ না থাকার ব্যাপারে আগে থেকে ছিল না কোনো প্রচারণা। প্রচারণা না থাকায় সাধারণ মানুষ পড়েছে নানা বিপাকে।
ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, বর্তমানে উখিয়া পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গ্রাহক সেবাকে গুরুত্ব না দিয়ে দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। টাকা ছাড়া বিদ্যুতের কোনো কাজই হয় না। কক্সবাজার জোনাল অফিস উখিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রয়েছে একাধিক দালাল। দালালের মাধ্যমে অবৈধ লেন-দেন হয় বলে ভুক্তভোগী একাধিক গ্রাহক এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
হাজীপাড়ার শহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার খেলায় আমরা অতিষ্ঠ জীবন যাপন করছি। একদিকে ব্যবসা গরম অন্যদিকে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকায় অসুস্থ ব্যক্তি ও শিশুদের দারুণ কষ্ট হচ্ছে।
রাজাপালং এলাকার মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার সময় লো ভোল্টেজের কারণে আমার বাসার মটর ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি উল্টো প্রশ্ন করে বলেন পল্লী বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি থামাবে কে? প্রসাশন কানি রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ?
পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, উখিয়াতে বিদ্যুতের লাইন রক্ষণাবেক্ষণে পল্লী বিদ্যুতের দায়িত্বহীনতার সচেতন মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। লাইন মেরামতে পল্লী বিদ্যুৎ কী বরাদ্ধ দেয় না? আর দিলেও এগুলো যায় কোথায়? লাইনের ওপর থাকা গাছপালা কর্তন ও মেরামত না করায় বড় তুফানে গাছপালা পড়ে তার ছিঁড়ে অনেক সময় ঘটেছে দুর্ঘটনা। এখন প্রায় প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় গ্রাহকদের।
জনসাধারণকে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না করলে হয়তো জনগন ফুঁসে উঠবে তখন সামাল দিতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের ইচ্ছামত চলেছে এখানের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। সাধারণ গ্রাহকের দুর্ভোগের বিষয়টি বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ মোটেই আমলে নিচ্ছেন না। ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়া-আসায় উপজেলার অনেক সাধারণ মানুষ পড়েছে নানা বিপাকে। সাধারণ জনগণের মধ্যে বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ ও উত্তেজনা।
পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন বলেন, এখনও শীতকাল তারপরও কেন লোডশেডিং ব্যাপারটা খুবই দুঃখজনক৷ সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ দিচ্ছে কিন্তু অসাধু কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ফলে আজ জনগণের এই ভোগান্তি। ফলে সরকারেরও ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার খেলায় সাধারণ মানুষের কষ্ট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।  তবে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা দিনরাত ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানান।
উখিয়া পল্লী বিদ্যুতের প্রকৌশলী ও নবাগত ডিজিএম মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, উখিয়া এবং পালংখালীতে সার্ভিস্ট্রেশন করার জন্য বুধবার বিদ্যুৎ বন্ধ ছিল। আর যে লোডশেডিং বলা হচ্ছে আসলে তা না। কুয়াশার কারণে বিদ্যুতের ফিচ পড়ে যায়। কক্সবাজার থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনি করে মানুষকে বুঝানোর চেষ্টা করছেন।
বিদ্যুৎ অফিসের অন্যরা বলেন, লোকবল সংকট থাকায় আমাদের দিনরাত গাধার মতো খাটাচ্ছে।

পাঠকের মতামত: