কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ায় চারজনকে পিষে মারার ডাম্পার চালক ধরাছোঁয়ার বাইরে

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মোস্তফা, উখিয়া বার্তা::
কক্সবাজারের উখিয়ার টিভি টাওয়ার সংলগ্ন এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা ও মিনিট্রাকের (ডাম্পার) মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ৪ জনের নিহতের ঘটনায় ঘাতক ডাম্পার জব্দ করলেও চালক ও মালিক মোহাম্মদ হোসাইন ছোটনকে এখনও আটক করতে সক্ষম হয়নি প্রশাসন৷
ঘটনার বিষয়ে উখিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা মামলা দায়ের করেছেন নিহত সিএনজি চালক আমিনের পিতা ছৈয়দ আলম৷ যার মামলা নং ০৩/১০৬।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাহাত বলেন, মামলাটি তদন্ত চলছে শেষ হলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ তবে ডাম্পার চালকের খুঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই মর্মান্তিক দূর্ঘটনার ডাম্পারের ঘাতক চালক বালুখালীর পুরাতন রোহিঙ্গা মাহমুদল হকের ছেলে হোছাইন ছোটন এবং তার ড্রাইভার আলমগীর প্রকাশ্যে ঘুরছে এবং ডাম্পার চালাচ্ছে। এভাবে বেপরোয়া ডাম্পার মালিক ঘাতক ছোটন ও চালক আলমগীর পার পেলেই সমাজে আরও বড় ধরনের দূর্ঘটনা হতে পারে৷
এ বিষয়ে ডাম্পার মালিক ছোটন সড়ক দূর্ঘটনার বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, গাড়ি রাস্তায় থাকলে দূর্ঘটনা হবেই তাই বলে দোষের কিছুই নাই। যারা নিহত হয়েছে তাদের সম্পূর্ণ খরচ বহন করা হয়েছে। আহত দুজন চট্টগ্রাম বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা খরচ চালিয়ে যাচ্ছি। মূলত ডাম্পারের চালক ছিলেন আলমগীর৷ তিনিও এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছেন বলেও জানান৷
উখিয়া সুশীল সমাজের প্রতিনিধি নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, চালকদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালনা, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, যাত্রীদের অসতর্কতা, ট্রাফিক আইন না মানা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার করা, মাদক সেবন করে গাড়ি চালানো এবং অসচেতনতার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও এ সমস্যা রোধে নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ। লোকদেখানো কিছু মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা ছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরগুলো আর কিছুই করছে না। বিভিন্ন সময় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সভা-সেমিনারের আয়োজন করা হলেও সেখানে সবসময় বলে থাকি৷
শাহপুরি হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তা সাফায়েত বলেন, বিষয়টি তদন্তনাদী আছে। তদন্ত শেষ হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ এখনও নিশ্চিত নই কে বা কারা জড়িত। বিস্তারিত মামলার আইও মোহাম্মদ রাহাদ যোগাযোগ করেন৷
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। সড়ক দুর্ঘটনার অধিকাংশই ঘটে অদক্ষ চালক ও তাদের সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে। সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে সাধারণ মানুষদেরও সচেতন হতে হবে। সেইসঙ্গে সব দপ্তরকেই সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ২২ মার্চ রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এমএসএফ রবার গার্ডেন প্রকল্প সংলগ্ন ঢালুতে মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে চার জন নিহত হয়৷

পাঠকের মতামত: