কক্সবাজার, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

মাছ পেলে ভাত খায়, না হলে উপবাস

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মোস্তফা, উখিয়া বার্তা : 

সুষ্ঠু প্রজনন ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের পরিচর্যা, সংক্ষরণ ও উন্নয়নে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত দেশের সমুদ্রসীমায় ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য সম্পদ অধিদপ্তর। তবে এ কর্মসূচির কারণে উখিয়ার উপকূলীয় জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

জেলেরা এ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও কমিয়ে আনার দাবি করেছেন। উপজেলার মাদারবনিয়া গ্রামের জেলে আশরাফ আলী মিয়াজী জানান, ৬৫ দিন সাগরে না গিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে হলে জাল, মাছ ধরার সরঞ্জাম নৌকা সব বিক্রি করে দিয়ে পেশা বদল করতে হবে। অন্যথায় সরকারি প্রণোদনা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

জেলে নৌকার শ্রমিক অলি উল্লাহ দুঃখ করে বলেন, কয়েক দিন আগে ছিল দুই মাস এখন আবার ৬৫ দিন। এরকম পর পর নিষেধাজ্ঞা চলতে থাকলে উপকূলের জেলেদের অন্য পেশায় চলে যেতে হবে। তা না হলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

জেলে শামিম বলেন, আমরা সাগরে মাছ পেলে ভাত খায় না হলে উপবাস থাকি৷ আমাদের সরকারি ভাবে সহযোগিতা না করলে না খেয়ে মরতে হবে৷

উপকূলীয় মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি জানান, সরকার দেশ ও জনগণের স্বার্থে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তা আমাদের মানতে হবে। কিন্তু জেলেদের জন্য বরাদ্দ চাল যেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

জালিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আলম জানান, সোনারপাড়া ঘাটঘর থেকে মনখালী পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকায় প্রায় ১০ হাজারেরও অধিক জেলে আছে। রয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি মাছ ধরার নৌকা, যা নিয়ে জেলেরা জীবনধারণ করে আসছে। এসব নৌকায় হাজারেরও অধিক শ্রমিক রয়েছে। যারা মাছ পেলে ভাত খায় না হলে উপবাস থাকে। এমন পরিস্থিতিতে এসব জেলের সরকারি প্রণোদনা যথাযথভাবে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন।

উপজেলা মৎস কর্মমকর্তা সুরজিৎ পারিয়াল বলেন, উপজেলা নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৩৮৯২ জন৷ প্রত্যেক জেলেকে ৫৬ কেজি করে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে চাল দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, জেলেদের প্রণোদনা বা তাদের অনুকূলে বরাদ্দ চাল পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: