কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

গণহত্যার বিচার চেয়ে কাঁদল রোহিঙ্গারা

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক জান্তা কর্তৃক রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর বর্রোচিত নির্যাতন, সহিংসতা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ ও গণহত্যা শুরু হয়। সেই থেকে এই দিনটিকে কালো দিবস আখ্যা দিয়ে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে রোহিঙ্গারা।

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সেই দিনের ৫ বছর পূর্ণ হলো। এদিন গণহত্যার বিচার চেয়ে সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গারা। সমাবেশ থেকে রোহিঙ্গারা জানান, ১০ শর্ত পূরণ হলেই তারা ফিরবেন নিজ মাতৃভূমিতে। এসময় গণতহত্যার বিচারের জন্য কেদেঁছেন তারা।

সূত্র জানায়, গণহত্যা দিবস উপলক্ষে নিজ মাতৃভূমিতে মিয়ানমার ফিরতে ১০ শর্ত দিয়ে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে  একযোগে সমাবেশে করেছে রোহিঙ্গারা। সমাবেশে পুরুষদের পাশাপাশি নারী, শিশুরাও যোগ দেন। পোস্টার, প্ল্যাকার্ডে গণহত্যা ও দমন-পীড়নের বিচার এবং অধিকার সহকারে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবি তুলেন তারা।

রোহিঙ্গা ‘গণহত্যা’র পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষ্য উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত ১, ৩, ৫, ৭, ৯, ১২, ১৩, ৮, ১৯, ২০, নম্বর ক্যাম্পসহ ২২ জায়গায় একসঙ্গে দিবসটি পালন করেন। তারা সেখানে মিয়ানমারে গণহত্যার বিচার এবং দ্রুত মিয়ানমার ফেরত যাওয়ার দাবি তুলেন।

মিয়ানমারে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতি, সীমিত সময় রাখা যাবে মিয়ানমার ট্রানজিট ক্যাম্পে, সকল রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করতে হবে, সেফজোন, নিজস্ব সহায়-সম্বল ফেরত, প্রত্যাবাসনের সময় বেঁধে দেওয়া, একবারে গ্রামের সব মানুষকে প্রত্যাবাসন করা, রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসেবে উত্থাপন না করা। এছাড়া প্রত্যাবাসনে প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, বাংলাদেশসহ দাতা সংস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করার শর্তগুলো পূরণ হলেই  তারা নিজ দেশে ফিরে যাবে বলে সমাবেশে জানান।

কুতুপালংয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, আজকে ‘গণহত্যা’ দিবস পালন করেছি। এদিনে মিয়ানমারের জান্তা সরকার আমাদের ‘গণহত্যা’ করেছে। আমরা রিফুজি হয়ে থাকত চাই না। এখন সোনালি আরাকানে ফিরতে চাই। জান্তা সরকার আমাদের নিধন করতে ৫ বার বিতাড়িত করেছে মিয়ানমার থেকে। প্রতিবারই মানবিক বাংলাদেশ আামদের আশ্রয় দিয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণকে ধন্যবাদ জানাই।’

এদিকে সমাবেশ শেষে মিয়ানমার সামরিক জান্তার হাতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। সেই সময় গণহত্যার বিচার চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে উপস্থিত রোহিঙ্গারা।

ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসাইন বলেন, গণহত্যা দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। সব ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য সর্ব্বোচ্চ সতর্কাবস্থানে রয়েছে প্রশাসন।

পাঠকের মতামত: