কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে চরম নিরাপদ খাবার পানি সংকট

আমিনুল ইসলম, নাইক্ষ্যংছড়ি::

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পাহাড়ি জনপদের সদর ইউনিয়নের চাকড়ালা,উপজেলা সদর, বাগান ঘোনা, সহ,সোনাইছড়ি ও দোছড়ি ইউনিয়ন এবং ঘুমধুমের বিভিন্ন গ্রামে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

অনুসন্ধানে জানাজায় প্রচন্ড গরমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এ তিন ইউনিয়নে অন্তত দেড়,দুই শতাধিক রিংওয়াল,নলকূপ অকেজু হয়ে পড়েছে । এতে করে পাহাড়ি বাঙ্গালিদের ঘরে ঘরে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়। একদিকে পবিত্র মাহে রমজানের এবং করোনা সংকটে,নিরাপদ খাবার পানি নিয়ে নেই কোন সঠিক উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট দের।

এসময়ে চতুর দিকে চলছে পানির জন্য হাহাকার।সদরের বাগান ঘোনার বাসিন্দা ব্যাংকার,কুতুবউদ্দিন বলেন,পানির অভাবে গ্রাম ছেড়ে কক্সবাজরে অবস্তান করছি।আমার আসপাশের খাল নালা পুকুর রিং ওয়েল সব শুকিয়ে গেছে নানা উন্নয়ন হলেও এখানো পানির সমস্যা প্রখড়।এছাড়া অনুসন্দানে জানাজায় অনেকে লেক,পুকুর ও ছড়ার ময়লা যুক্ত পানি খেয়ে টাইফয়েডসহ নানা পানিবাহীত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন,তার ইউনিয়নে পানির সমস্যা দীর্ঘ দিনের এ সমস্যা নিরসনে তিনি সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।

দোছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা সাবেক মেম্বার ও আওয়ামিলীগের সহ সভাপতি আবদুল নবী জানান, তাদের বাড়ির একটি রিংওয়াল ছাড়াও তার বাড়ির আশপাশের আরও কয়েকটি নলকূপ থেকে পানি কম উঠছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এ দশার সৃষ্টি হয়েছে। একই ভাবে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর সোনাইছড়ি, দোছড়ি ইউনিয়সহ ঘুমধুমের বিভিন্ন গ্রামে বাইশফাড়ী, বরইতলীসহ অর্ধশত গ্রামে খাবার পানির তীব্র সংকট চলছে। এসব গ্রামে প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার মানুষের বসবাস। সোনাইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান এ্যনি মার্মা জানান, তার ইউনিয়নে উপজাতীয় পল্লীর অর্ধশতাধিক রংওয়েল/ টিউবওয়েল অচল হওয়ায় নারী ও শিশুদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে পাহাড়ি ছড়া, ঝিরি পানিও শুকিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে শত শত কৃষকের চাষাবাদও ব্যাহত হয়ে টিক ভাবে ফসলও হয়নি এবছর । উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলহাজ্ব মোঃ শফিউল্লাহ জানান, প্রচন্ড গরমে শুষ্ক মৌসুমের তিন মাস এসব পাহাড়ি এলাকায় খাবার পানির তীব্র সংকট দীর্ঘদিনের বিষয়টি নিয়ে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বান্দরবান জেলার নির্বাহি প্রকৌশলিকে অবগত করা হয়েছ, সদরে নিরাপদ পানি সরবরাহে জন্য একটি প্রকল্পের কাজ করছি। এছাড়া পার্যায ক্রমে এসব এলাকার পাহাড়ি-বাঙ্গালীদের পানির চাহিদা পূরণ করার আশ্বাস প্রদান করেন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী শাহ মোঃ আজিজ জানান, প্রচন্ড গরমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপ/ রিংওয়াল গুলোতে পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে। কিছু স্থানে ১৫০ ফুট নিচে গিয়েও নলকুপে পানি পাওয়া যাচ্ছে না।দৌছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ বলেন,তার ইউপিতে ঝিরি-ছড়ার পানির উৎস বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তীব্র তাপদাহে বন্যপ্রাণীরা পানির উৎস খোঁজে ঝিরি-ছড়ায় নেমে এসেছে। ফলে পানির শেষ উৎস গুলো এখন দূষিত হয়ে পড়েছে। দূষিত পানি পান করে এলাকার মানুষ অসুস্থ হছে। তিনি এ বিষয়ে পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পাঠকের মতামত: