মাহে রমজান আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য লাভের সময়। এ মাস হজ্বে বায়তুল্লাহর প্রস্তুতিরও মাস। যাদের ওপর হজ ফরজ করা হয়েছে তাদেরকে এ মাসেই হজ আদায়ের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
ইসলামের মৌলিক পাঁচ স্তম্ভের সবগুলোই রমজান মাসে বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে। সে হিসেবে যাকাত যেমনি রমজানে দেয়া উত্তম তেমনি হজের ভিসা গ্রহণসহ আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় কাজও রমজানের মধ্যেই সেরে ফেলতে হয়। হজ প্রাপ্ত বয়স্ক, সুস্থ ও আর্থিকভাবে সক্ষম সকল মুসলমানকে জীবনে একবার অবশ্যই পালন করতে হবে। আল কুরআনে আদেশ করা হয়েছে, “মানুষের মধ্যে যারা বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌছার সামর্থ রাখে তাদের ওপর ফরজ হলো তারা আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহ শরীফে হজ করবে, আর যে তা করতে অস্বীকার করবে তার জানা উচিত আল্লাহ বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন।” (সুরা আলে ইমরান-৯৭) অন্য জায়গায় এসেছে, “আল্লাহর সন্তোষ বিধানের জন্য যখন হজ ও ওমরার নিয়্যত করবে, তখন তা পূর্ণ করবে।” (সুরাতুল বাকারা-১৯৫)
হজ একটি আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। এ ইবাদতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সীমাহীন । হাদীস শরীফে এসেছে, “যার কাছে বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার বাহন ও পাথেয় আছে; তা সত্ত্বেও সে হজ করে না তবে সে ইহুদি হয়ে মরুক কিংবা নাসারা হয়ে মরুক।” আরেক জায়গায় ইরশাদ হয়েছে, হজ ইচ্ছা পোষণকারী যেন তাড়াতাড়ি তা সমাপন করে ফেলে। কেননা সে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে, তার উট হারিয়ে যেতে পারে, বা তার ইচ্ছা বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে।” (ইবনে মাজাহ)। হাদীস শরীফে মকবুল হজ্বের বহু ফজিলত সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। হজে পালনকারী নিষ্পাপ শিশুর মত পবিত্র হয়ে যায়। হাদীসে এসেছে, “মকবুল হজের বিনিময় জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।”
রমজান মাসে ওমরাহ পালন করা অত্যধিক সাওয়াবের কাজ। তাই প্রতি বছর মুসলিম বিশ্ব থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান এ মাসে পবিত্র মক্কা শরীফে জমায়েত হন। তারা আল্লাহর পাকের সান্নিধ্য লাভে নিজেদের সকল সত্ত্বা বিলিয়ে দিয়ে দিনরাত ইবাদতে মশগুল থাকেন।
এ প্রেক্ষাপটে দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পোদ্যাক্তা আলহাজ মুহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী ২০০৭ সালে রমজানের প্রারম্ভে উমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা শহরে গমন করলে বার্ধক্যজনিত রোগে ইন্তেকাল করেন এবং এ পবিত্র মক্কা নগরীতেই তাকে চিরতরে শায়িত করা হয়। হে আল্লাহ মালিক ! তুমি মরহুমের এ সৌভাগ্যময় মৃত্যুকে জান্নাতে যাওয়ার উসীলা বানিয়ে দিন আর আমাদের সবাইকে ফরজ হজ আদায় এবং পবিত্র রমজানে বেশি বেশি উমরাহ পালন করার তৌফিক দান করুন। আমিন
পাঠকের মতামত: