ঈদের দেখা বছর পরে
ঈদ এসেছে সবার ঘরে,
মান -অভিমান,ভেদাভেদ ভুলে,
সবাইকে নাও বরন করে,
ঈদ কাটুক সবার আনন্দের তরে।
সকলকে পবিত্র ইদ উল ফিতর এর শুভেচ্ছা।
“ইশ ঈদের দিনটি যেন আরো লম্বা হোক,সহজেই যেন শেষ না হোক”এটি ছিল ছোটবেলায় ঈদের দিন চাওয়া একটি প্রার্থনা।মেহেদীর গাঢ় রং,হাতে মেহেদী দিয়ে আঁকা চাঁদ,নতুন পোশাকের ঘ্রাণ, সুগন্ধি ময় সাবান, ঈদ যদি শীত কালে হয় গরম পানি দিয়ে গোসল,সালামি,আত্মীয়ের বাসায় যাওয়া এ যেন ঈদ উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে দেয়।
ঈদ -উল-ফিতর মানে আনন্দ,খুশি। এটি মুসলমানদের দুটি বড় ঈদের মধ্যে একটি।দীর্ঘ একমাস রমজান কাটিয়ে নিজেকে সংযত রেখে আত্মশুদ্ধির সুযোগ পেয়ে মানুষ নতুন ঈদকে বরন করে নেয়।অথচ গত বার ঈদ উপভোগ করেছে আর এবার সে কেবল স্মৃতি হয়ে আছে এমনও ঘটনা রয়েছে।সব মিলিয়ে যারা নতুন ঈদ কাটাতে আরো একটি সুযোগ পেয়েছে তারা ঈদ আনন্দে মাতোয়ারা বা আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে।
বড় হয়ে যে ঈদ আমরা পালন করি তার চেয়ে ছোট বেলার ঈদটা আমাদের বেশি উত্তেজনায় কাটত।খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা।ভোরে ওঠে হাতের মেহেদী দেখা, সুগন্ধি ময় সাবান চারদিকে সুবাস ছড়ায় ।নিজেকে নতুন মনেহয়।সবাই নতুন পোশাক পরিধান করে এ পোশাকেও থাকে আলাদা এক সুবাশ।সবার সাথে বের হওয়া,ইদের নামজ শেষে সবাই কোলাকুলি করে ।বাড়িতে এসে মিষ্টি জাতীয় খাবার,আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যাওয়া।সব মিলেয়ে নিজেকে খুব সুখী মনেহয়,আনন্দে আত্মহারা শিশু থেকে বৃদ্ধ।
তবে বয়স বাডার সাথে সাথে ঈদ আনন্দ কিছু টা কমতে থাকে।একটা বয়সে নিজেরা খুশি হতো ঈদ নিয়ে সময়ের ব্যবধানে তাকে পরিবারের অন্য দের খুশির চিন্তা করতে হয়।অনেক সময় হারিয়ে যায় নিজের আনন্দটাও।
আবার ঈদ সকল মুসলমানের জন্য খুশির হলেও কিছু মানুষ তৃপ্তি নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারে না।বাড়ি থেকে দুরে থাকা আত্মীয় রা বাসায় আসতে ভিড় জমায়।তবে অনেকের ইচ্চে থাকা সত্ত্বেও দুরে ঈদ কাটাতে হয়।আবার অনেক শিশুর নতুন পোশাক ভালো খাবার না পাওয়াটা তাদের আনন্দ মাটি করে দেয়।অন্যকে পরিপূর্ণ দেখলে তার অপ্রাপ্তি গুলোর কষ্ট যেন আকাশ সমান হয়।তাদের অল্প কজন সাহায্য করে তবে সবাই সাধ্য মতো যদি মানবিক হাত বাডিয়ে দেয় তারাও ঈদকে সোনালী মুহুর্তের মতো করে কাটাতে পারবে অন্যদের মতো।এসবে তার আনন্দ বৃথা লাগলেও পরক্ষণেই ঈদ মানে খুশি কথাটি ভুলে না। সব কষ্ট ভুলেও মনের এক কোণে অজানা ভালো লাগা, খুশি কাজ করে।
সবশেষে সকল মুসলমানরা সকল কাজ কর্ম ফেলে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে কাটানোর একটি দিন।মুসলমানের ঈদ হলেও সব ধর্মের মানুষ তার মুসলমান বন্ধুর বাসায় আসে ইদ বিনিময় করে। এটি গোটা বিশ্ব মুসলিম জাতিকে এক ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে।কেননা অন্য কোনোদিন সকল মুসলমান একইদিনে একসাথে পরিবারেকে সময় দেয় না,এটি সম্ভব ও না যেটি কেবল মাত্র ঈদেই সম্ভব।
বড়দের তুলনায় ছোটরা ঈদে আনন্দে মাতোয়ারা থাকে।তাদের মাঝে ঈদের আনন্দ বহমান থাকে।বাডির কর্তা বা পিতা ব্যস্ত থাকে সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে। হয়ত তাদের ছোটবেলায় তাদের পিতারা এ কাজ করতেন।সময় এবং বড হবার সাথে তাদের বাড়ির অন্যজনের হাসির খোরাক জোগাতে হয়।এভাবে বয়সের সাথে আনন্দ টাও কমে যায়।তবে তাদের প্রাপ্তি সেখানেই থাকে যখন বাডির অন্যদের মিলনমেলা দেখে আনন্দ দেখে।
যা হোক ঈদ মানে মিলনমেলা।রাগ- অভিমান, ঝগডা,বিবাদ ভুলে সম্পর্ক নতুনত্ব লাভ করে।ঈদে নতুন পরিচিত মানুষ মুখ বাড়ে,আবার কিছু পরিচিত মুখ হারিয়েও যায়। ঈদে সালামি বিষয়টা সবার আনন্দ বাডিয়ে দেয়।এটি যেন ঈদের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ।
সর্বোপরি ঈদ সকল মুসলমানকে এক সুতোয় বাধে,বন্ধন মজবুত করে। ঈদের খুশি বিরাজ করুক সকলের মাঝে।পরিশেষে বলতে চায়-
ঈদের হাওয়া লাগুক প্রানে,
মন ভরে যাক নতুন গানে ,
ঘুম ঘুম চোখে স্বপ্নিল চাওয়া,
ঈদে গ্লানি মুছে, হোক সবকিছু পাওয়া
লেখক :
উম্মে সালমা
বিএ প্রথম বর্ষ -কক্সবাজারে সরকারি কলেজ।
পাঠকের মতামত: