কক্সবাজার, রোববার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

দাফনের আগে জীবিত হলেন হাসপাতালে ‘মারা যাওয়া’ নারী

চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৬ বছর বয়সী বেলা মোনতোয়া নামের এক নারীকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তাঁকে কফিনে করে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু পাঁচ ঘণ্টা পর কফিন খুলে দেখা নিঃশ্বাস নিচ্ছেন বেলা মোনতোয়া।

ঘটনাটি ঘটেছে ইকুয়েডরে। বাবাহোয়ে শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ওই নারী। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। ওই নারীর ছেলে গিলবার্ট বালবেরান মায়ের জীবিত হয়ে ওঠার বিষয়ে বলেন, কফিন খুলে দেখি মা বাঁ হাত দিয়ে তাঁর চোখ বোলানোর চেষ্টা করছেন। শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার জন্য বন্ধ কফিনে বেগ পেতে হয়েছে তাঁকে।

এর কিছু পর উদ্ধারকর্মীরা এসে পুনরায় তাঁকে একই হাসপাতালে নেন। গিলবার্ট ইকুয়েডরের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর মা এখন নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রয়েছেন। তবে জ্ঞান রয়েছে। সাড়া দিচ্ছেন। ইকুয়েডরের সংবাদমাধ্যম এল ইউনিভারসোকে গিলবার্ট বলেছেন, ‘মাকে এখন অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তাঁর হৃদক্রিয়া স্বাভাবিক রয়েছে। ডাক্তার তাঁর হাতে চিমটি কাটলে তিনি সাড়া দিয়েছেন। অর্থাৎ, তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন।

আরো পড়ুন: মেস ও ভাড়া বাসায় থাকেন বেরোবির ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী

গিলবার্ট আরও বলেন, মাকে আমি সকাল ৯টার দিকে হাসপাতালে নিই। হাসপাতালে ডাক্তার মাকে মৃত ঘোষণা করেন। কার্ডিওপুলমোনারি অ্যারেস্টে আক্রান্ত হয়েছিলেন মর্মে একটি মৃত্যুর সনদপত্রও দেয়।

‘মৃত্যু’ থেকে ফিরে আসা নারী মোনতোয়া প্রথম নন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কে ৮২ বছর বয়সী আরেক নারী অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াকালে জেগে ওঠেন। এর তিন ঘণ্টা আগে তাঁকে একটি নার্সিং হোমে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল।

চেমসফোর্ডের অ্যাঞ্জিলা রাসকিন ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের প্রভাষক ড. স্টিফেন হিউজ বিবিসিকে বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা খুবই বিরল। তবে মৃত্যু একটি প্রক্রিয়া, যা বেশ কিছুক্ষণ সময় নেয়। কিছু সময় কাউকে পরীক্ষা করে মনে হতে পারে ব্যক্তিটি মারা গেছেন। তবে আসলে তিনি জীবিত হতে পারেন। তাই কাউকে মৃত ঘোষণার আগে সতর্কভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন।

হিউজ আরও বলেন, ‘চিকিৎসক প্রথমে দেখবেন রোগী সাড়া দেয় কি না এবং নাড়ি আছে কি না। এরপর হৃৎক্রিয়ার শব্দ শুনবেন। তিনটির সবগুলোতেই না উত্তর এলে তখন রোগীকে মৃত ঘোষণা করা যায়। কিন্তু কারও শরীর যদি অত্যধিক শীতল থাকে, এমন সময় কাউকে মৃত ঘোষণা করা দক্ষ চিকিৎসকের জন্যও বেশ কঠিন। কেননা, এ সময় রোগীর হৃৎক্রিয়া এতই ধীর হবে যে দেখে মনে হবে মারা গেছে। কিছু উচ্চমাত্রার ওষুধ সেবনের ফলেও এমনটি হতে পারে।

পাঠকের মতামত: