কক্সবাজার, বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪

সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় কক্সবাজার সৈকত

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য শতভাগ নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা হবে। পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নানাভাবে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের হেডকোয়ার্টারের ডিআইজি মো. আবু কালাম সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল স্পট ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও বসানো হবে এই ক্যামেরা।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লাবনী পয়েন্টস্থ ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের সম্মেলন কক্ষে পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ‘দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। কারন! পর্যটন শিল্প জাতীয় অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এখানে দেশীয় পর্যটকের সাথে বিদেশী পর্যটকের আগমন বাড়ানো গেলে জাতীয় অর্থনীতিতে রাজস্ব বাড়বে। এর জন্য একটি নিরাপদ পর্যটন জোন করতে যা যা করা প্রয়োজন তাই করবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ইতোমধ্যে সমুদ্র সৈকত এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারির কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব স্পট ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। আমরা ঢাকায় বসে এর মনিটরিং করবো।’
পর্যটকের নিরাপত্তায় সকল ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, পর্যটক এরিয়াকে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলতে হলে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা ও সহযোগিতার প্রয়োজন। এর জন্য সরকারের আইন মেনে পর্যটকদের কক্ষ ভাড়া প্রদান, খাবার বিক্রি, হাসিমুখে কথা বলা, সুন্দর আচরণ জরুরী। কিন্তু কেউ আইন অমান্য করলে বা পর্যটক হয়রানির মত কিছু হলে তা মেনে নেয়া যাবেনা।

তিনি বলেন, কক্সবাজারের টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ইনানী বিচসহ সকল পর্যটন স্পটে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হবে। এই বীচ কিন্তু আমাদের একেকটা রিসোর্ট। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা। এই কক্সবাজারে মানুষ আসে ইনভেস্ট করার জন্য। এমরা এখন উন্নত বিশ্বের দিকে যাচ্ছি। ট্যুরিস্ট পুলিশ একমাত্র পুলিশ যাঁরা জনগণের দোরগোড়ায় গিয়ে সেবা দিচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্য পুলিশ সুপার মো মাহফুজুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় জিডিপির অবস্থান খুবই কম। অন্যান্য দেশে ৪০ শতাংশ জিডিপি আসে পর্যটন খাত থেকে। এটা আমাদের বাড়াতে হবে। এজন্য সকলকে আন্তরিক হতে হবে। নিরাপত্তা সাথে গুজবেরও একটি সমস্যা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২১১ পুলিশ দিয়ে সবকিছু কন্ট্রোল করা সম্ভব নয়। এজন্য পর্যটকের নিরাপত্তার জন্য ১৫০ টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। ইতিমধ্যে কিছু লাগানো হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুজ্জামান দৈনিক কক্সবাজারকে জানান, গত তিন আগে প্রাথমিকভাবে সৈকতের লাবনী পয়েন্ট চারটি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এগুলো সরাসরি ঢাকা হেডকোয়ার্টার থেকে মনিটরিং হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব-কটি পয়েন্ট ছাড়াও হোটেল মোটেল জোনে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। পুরো পর্যটন স্পট ক্যমেরার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। এতে করে নানা সমস্যা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মো. আবু কালাম সিদ্দিক। মূখ্য আলোচক ছিলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি বিধান ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেন, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী। প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম সহ পর্যটন শহরের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার স্টক হোল্ডাররা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পর্যটন খাতে নানা জটিলতা, সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয় টমটম নিয়ে। এছাড়া ঢাকা থেকে আসা গাড়ি সরাসরি হলিডে মোড়ে নামলে পর্যটকরা টমটম চালক, রিকশা ও দালালদের হাত থেকেও রক্ষা পাবে বলেও জানানো হয়। এছাড়া সড়কের ফুটপাত দখল, হকারদের উৎপাত, খাদ্য’র দাম ও হোটেল ভাড়া নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা করে সমাধানের প্রতিশ্রুতিও দেন ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি।
মতবিনিময় শেষে সমুদ্র সৈকতে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ পরিদর্শনে যান ট্যুরিস্ট পুলিশের হেডকোয়ার্টারের ডিআইজি মো. আবু কালাম সিদ্দিক।

পাঠকের মতামত: