কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ায় ধান সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি

উখিয়া বার্তা রিপোর্ট::  

সারাদেশের ন্যায় উখিয়া খাদ্য গুদামে সরকারি ভাবে বোরো মৌসুমের ধান, চাল সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। বাজারে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় গুদামে ধান দিতে আগ্রহী নন কৃষক। তেমনি বাড়তি দামে ধান ক্রয় করে চালের পড়তা বেশি পড়ায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরও খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহ করেননি মিলাররা। বর্ধিত সময়েও ধান, চাল ক্রয় অভিযানের চিত্র হতাশা ব্যঞ্জক দাবী করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন নেতিবাচক পরিবেশের কারণে কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধান গুদামজাত করেছে। যে কারণে সময়সীমা বর্ধিত করার পরও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে সক্ষম হয়নি।

রাজাপালং ইউনিয়নের দোছরী গ্রামের কৃষক আব্দু সালাম, রুহুল আমিন বলেন, খোলা বাজারে ধান, চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় সেখানে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বাজারে স্বচরাচর ঘরোয়া পরিবেশে ধান, চাল বিক্রি করা সম্ভব হয়। যা খাদ্য গুদামে কোন ভাবেই সম্ভব নয়।

সেখানে তাদের বাধা ধরা নিয়ম নীতি পালন করতে গিয়ে অনেক ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়। তাই খাদ্য গুদামে ধান চাল না দিয়ে খোলা বাজারে বিক্রি করা দেয়া হয়েছে। ওই কৃষক জানান, বাজারে ভাল দামও পাওয়া গেছে।

পালংখালী ইউনিয়নের কৃষক জমির আহমদ, লোকমান হাকিম জানায়, সরকার ১ হাজার ৪০ টাকা মন ধরে ধান কিনলেও ধান শুকানো, ফ্যার্নিং করা, ময়েশ্চারসহ ধান গুদামে দেওয়ার পরও তারা বিভিন্ন অজুহাত তুলে কালক্ষেপন করে থাকে। এসমস্ত কারণে খাদ্য গুদামে ধান দেওয়ার চাইতে খোলা বাজারে প্রতি মন ৯শ’ টাকা থেকে প্রকারভেদে মন প্রতি হাজার টাকা পেলেও তা তাদের জন্য অনেক শ্রেয় বলে কৃষকেরা দাবী করেন।

উপজেলা খাদ্য গুদামের তালিকাভুক্ত মিলার ফিরোজ সওদাগর জানান, খাদ্য গুদামে ধান, চাল ক্রয় অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া করোনা ভাইরাস পরবর্তীতে
লাগাতার বর্ষণের কারণে কৃষকেরা খাদ্য গুদামের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেনি।

যে কারণে মিলাররাও ধান, চাল ক্রয় করতে ব্যর্থ হওয়ায় খাদ্য গুদামের উপর প্রভাব পড়েছে। আশা করি আগামীতে এমন প্রভাব থাকবে না। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সুযোগ সন্ধানী মিলাররা কৃষকেরা কাছ থেকে কম দামে ধান চাল ক্রয় করে মজুদ করে রাখে। যা ক্রমান্বয়ে বাজারে ছেড়ে অতিরিক্ত ফায়দা লুটছে।

যে কারণে এসব মিলাররা খাদ্য গুদামের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকার পরও তারা যথা সময়ে ধান চাল খাদ্য গুদামে সরবরাহ করেনি।
উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ৩১ মে থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত ১ হাজার ২০ মে.টন ধানের মধ্যে ৩০৪ মে.টন ধান ক্রয় করা হয়েছে। তাছাড়া ১ হাজার ৫০ মে.টন ধান চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ক্রয় করা হয়েছে ৯৮৭ মে.টন।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এলএসডি সুজিত বিহারী সেন জানান, চলমান প্রাকৃতিক দুযোর্গ যেমন সারাদেশ ব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের তান্ডব পরবর্তী ভারী বর্ষণের ফলে কৃষকরা আতংকগ্রস্থ অবস্থায় তাদের উৎপাদিত ধান চাল গুদামজাত করে রেখেছে।

এমন পরিস্থিতির কারণে মিলাররা তৃণমূল পর্যায়ে তাদের নির্ধারিত ধান চাল ক্রয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। পাশাপাশি নানা কারণে কৃষকরাও খাদ্য গুদামে ধান চাল ক্রয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। যে কারণে সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ধান চাল ক্রয় সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: