কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়া ও টেকনাফের স্থানীয়দের জন্য কোভিড-১৯ অর্থসহায়তা প্রকল্প চালু

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে অত্যাচার, নির্যাতন ও গণহত্যার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গার কারণে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার স্থানীয় জনগোষ্ঠী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে কক্সবাজারের অসহায় বাংলাদেশি পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তামূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছে। তবে এর কার্যক্রম করোনার সময় চালু হয়।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসাইন গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রকল্প উদ্বোধন করেন। প্রকল্পের অংশ হিসেবে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ৩৫ হাজার ৮৮৭টিরও বেশি পরিবারকে কোভিড-১৯ কার্যক্রমের আওতায় মাসিক অথবা এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এর আগে ১৬ হাজার ৮৮৭টি পরিবার বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ডাকঘর থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত সহায়তা নিয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক আরো জানান, এ বছরের শুরুর দিকে, আর্থ-সামাজিক সূচকের সমন্বয়ে পরিচালিত চাহিদা নিরূপণ প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় আরো ১৯ হাজার পরিবার ‘মোবাইল মানি’র মাধ্যমে জরুরি নগদ অর্থ সহায়তার জন্য নির্বাচিত হয়েছে। পাঁচ হাজার ৬০০টিরও বেশি পরিবার এরই মধ্যে তাঁদের প্রথম দফার অর্থ নিয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসাইন অনলাইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি আশা করি, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা সত্যিকার অর্থেই অসহায়, এই সহযোগিতা তাদের কাছে পৌঁছে যাবে। কক্সবাজারে আরো অনেক অসহায় মানুষ আছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করলে তাদের সবাইকে সহায়তা দিতে পারব। রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য এই বিপুল সহায়তার জন্য আমি ইউএনএইচসিআর এবং এর অংশীদারদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে, এই আর্থিক সহায়তা কার্যক্রমটি আংশিকভাবে ‘মোবাইল-মানি’, ‘বিকাশ’ এবং নগদ’-এর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে যেখানে ইউএনএইচসিআরের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ব্র্যাক, সিএনআরএস, মুক্তি এবং ওয়ার্ল্ডভিশন অংশ নিয়েছে।

অনুষ্ঠানে ইউএনএইচসিআর-কক্সবাজারের হেড অব অপারেশন মারিন ডিন কাজদোমকাজ বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্পের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বের দরবারে মানবতা এবং সহানুভূতিশীলতার এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে যখন সারা বিশ্বে আর্থ-সামাজিক সংকট চলছে তখন কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকা নির্বাহের জন্য ইউএনএইচসিআর আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।’

দুই বছর ধরে কাতারের বিশ্বহৈতেষী শেখ খলিফা থানি বিন আব্দুল্লাহ বিন থানি আল-থানি ইউএনএইচসিআরকে ৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছেন। এই অনুদানের একটি বড় অংশ কক্সবাজারে আশ্রিত শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর টেকসই এবং মর্যাদাসম্পন্ন জীবন গড়তে আর্থিক সহায়তা কার্যক্রমে ব্যয় করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: