কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

উনিও পুলিশ : আলমগীর মাহমুদ

সন্ধ্যায় মুকূল কয়, স্যার আপনারে মানুষ দেখাতে নিয়ে যাব।পছন্দ হবে। তবে আগে বলবো না কার কাছে নিয়ে যাবো। নীরবে ওদের সাথে সফর সঙ্গী বনে গেলাম । সোজা ইনানী পুলিশ ফাঁড়ি।

সাথে ‘আমাদের সময়’ উখিয়া প্রতিনিধি পলাশ বড়ুয়া। সমুদ্রকণ্ঠ উখিয়া প্রতিনিধি ইব্রাহিম মোস্তফা।

মুকুল পরিচয় করিয়ে কয়, উনি সিদ্ধার্থ সাহা। এস,আই। ইনচার্জ ইনানী পুলিশ ফাঁড়ি। উনার জন্মদিনের সাওগাতেই আসা।

আমি চুপচাপ ছিলাম বসা। এস, আই সাহেব দেখিয়ে যাচ্ছিলেন উনার নান্দনিক সব কর্মকাণ্ড। ফাঁড়ির বিপরীতে রাস্তার পশ্চিমে লাগোয়া উনার নিজ চেষ্টায় চল্লিশ শতাংশ ভূমিকে ফাঁড়ির অংশবিশেষ করে উনার নান্দনিক কর্ম আমাকে বিমোহিত করে। নান্দনিকতার সাথে মানবিকতা। এ যেন এক অনন্য সংযোজন।

ঐ ভূমিতে পুকুর,পেপে বাঁগান, টংঘর। সাথে পুকুরের কোণায় একটি পাবলিক টয়লেট। উনার গভীর বর্ননা। আমি খেয়াল করেছি ফরিয়াদি এবং পথচারীর বড় সমস্যা টয়লেট। আমি তাঁদের দুখের কথা ভেবেই গড়েছি। যদিও পানি সাপ্লাই নেই। আমি নিজ নজরদারিতেই পরিস্কারের দায়িত্বটা চালিয়ে নিতে কোনদিনই ভুলিনা।

এরপরে উনার অফিসে নিয়ে দেখালেন বৈচিত্র‍্যের ভেতর বিচিত্র কান্ড। ফাঁড়ি কম্পাউন্ডে আছে একটি পালিত ছাগল। যেটি উনার কন্ঠ শুনার সাথে সাথেই ছুটে আসে উনার পাণে।

আছে মুরগ,আর মুরগীর সংসার। সাঁজানো মুরগীঘর। ৬টি মুরগী ৪টা মোরগের বসত। সবচেয়ে অবাক করা বিষয়। মুরগী গুলো দিনে অফিসে উনার চেন্বারের চেয়ারের পাশে একটা কার্টুনে ডিম পেড়ে যায়। কার্টুনটিতে উনার হাতে গড়া খড় দিয়ে গড়া বাসা। কোথাও বিষ্টা ছাড়ে না। রাতে থাকে বাইরে । ওদের জন্য করে দেয়া বাসায়।

মুরগীগুলোও যেন কোন স্যারের শিক্ষায় প্রশিক্ষিত প্রশিক্ষিত ভাবের। একেক মুরগীর ডিম পাড়ার স্থান আমাদের আগের দেখা অভিজ্ঞতায় মেলে না।
উনার বিছানার নীচেও মুরগীর ডিম পাড়ার বাসা । তবে গন্ধ নেই।

গন্ধের কারনে মুরগীরবাসা মা ‘ কে রাখতে দেখতাম অনেক দূরেই। বিপরীত আবহে অবাক হলাম। সবাইর গোপন মনে বয়ে গেল ভাবনার ঝড়। আমার মনেও শুধু বাঁজতেই রইল … উনিও পুলিশ! উনিও পুলিশ!

লেখক:

বিভাগীয় প্রধান,
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ-উখিয়া কলেজ।
উখিয়া-কক্সবাজার।
alamgir83cox@gmail.com

পাঠকের মতামত: