কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে

২০২১ সালের এসএসসি (মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট) পরীক্ষা শিডিউল অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে। করোনা পরিস্থিতির বড় পরিবর্তন না হলে পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষায়ও বসতে হতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশ্বস্ত সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। যেকোনো দিন এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।

যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, পরীক্ষার ঘোষণা যখনই হবে তখনই শিক্ষাবোর্ড প্রস্তুত। তবে এখনো কোনো নির্দেশনা বোর্ডগুলোকে দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

কমবে পরীক্ষার্থী

সর্বশেষ ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থীয় অংশগ্রহণ করেছে ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ জন শিক্ষার্থী। সেবার পরীক্ষার্থী কমেছিলো সাড়ে ৮৭ হাজার। যার মধ্যে ছিলো ৪১ হাজার ৪৭৬ জন নারী শিক্ষার্থী। এবছর করোনা পরিস্থিতির কারণে এসএসসিতে পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা আরো কমতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে রাশেদা কে চৌধুরী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী আরো পিছিয়ে পড়েছে। তবে সব থেকে বেশি প্রভাব পড়বে নারী শিক্ষার্থীদের উপর। শুধু এসএসসি পরীক্ষাতেই নয়, সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা থেকেই নারীদের ছিটকে পড়ার হার থাকবে সবচেয়ে বেশি।

তবে শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, এখনো এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় কী পরিমাণ শিক্ষার্থী কমবে সে বিষয়ে কোন তথ্য শিক্ষাবোর্ডের কাছে নেই।

খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এসএসসি ও এইচএসসি’র আগামী বছরের পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে সামনের বছরের এসএসসি পরীক্ষা পেছানো হতে পারে কিনা এই প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কিনা সেটি দেখবো। যদি প্রয়োজন হয় তখন পিছিয়ে যেতে পারে। সেটি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। আমরা এখনই বলতে পারছি না পরীক্ষা পেছাবো কিনা।

পরীক্ষা আয়োজনে বাধা কোথায়

এসএসসি পরীক্ষার্থীরা মনে করে দীর্ঘ ৮ মাস সব ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ও কোভিড-১৯ এর প্রভাবে পড়াশুনার বাইরে রয়েছে তারা। এছাড়াও এসএসসি পরীক্ষার আগে যে মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয় বিদ্যালয়গুলোতে সে পরীক্ষাও নেয়া হয়নি। এমনকি পরীক্ষার্থীরা অটো পাসেরও দাবি জানিয়েছে।

অভিভাবকরা মনে করেন, পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণের আগে পরীক্ষার্থীকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয়ার সময় সরকারকে দিতে হবে। তা না হলে এমন ঘোষণা শিক্ষার্থীদেরকে মানসিকভাবে দুর্বল ও হতাশায় ফেলবে।

তবে ঢাকা মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল শাহান আরা বেগম মূল্যায়ন পরীক্ষা না হওয়ায় খুব বেশি অসুবিধা হবে না বলে মনে করেন। বাংলাদেশ জার্নালকে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি মূল্যায়ন পরীক্ষা ছাড়াই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেয় সেখানে কোনো অসুবিধা নেই। তবে মূল্যায়ন পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থীর ২০ শতাংশ অকৃতকার্য হয় বলেও তিনি স্বীকার করেন।

কী বলছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা

যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল আলম খান এর মতে, গ্রীষ্মের আগে করোনার ভ্যাকসিন জনগণের কাছে পৌঁছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। সেই পরিস্থিতিতে এসএসসি পরীক্ষার্থীর জন্য পরীক্ষা নেয়া কতটা বাস্তবসম্মত? এটি অবশ্যই মনে রাখা উচিত যে যখন সাম্প্রতিক সময়ে এইচএসসি (উচ্চ মাধ্যমিক প্রশংসাপত্র) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।

তবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক পরীক্ষার দিনক্ষণের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, পরীক্ষা যেদিনই শুরু হোক শিক্ষাবোর্ডগুলোর পরীক্ষা আয়োজনে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে।

পাঠকের মতামত: