কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেলে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কক্সবাজার সদর থানায় করা মামলা নাম্বার ৪৩।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনির উল গিয়াস।
ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই নারীর স্বামী বাদি হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।
কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার করিমের ছেলে আশিকুর ইসলাম আশিককে এক নাম্বার আসামী করে একই এলাকার মোঃ বাবু (২৫), ইসরাফিন হুদা জয় উরফে জয়া (২৮), রিয়াজ উদ্দিন উরফে ছোটন (৩০) নাম উল্লেখ করে আরো ২/৩ জনকে অজ্ঞাত রেখে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে ধর্ষণের শিকার হওয়া হোটেলটির এক কর্মচারি রিয়াজ উদ্দিন ছোটন (৩৩) নামের একজনকে আটক করেছে র্যাব। এর আগে হোটেলের সিসিটিভি (ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুজনকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে র্যাব।
র্যাবের ভাষ্যমতে, ওই দুই যুবক হলেন কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম আশিক ও আব্দুল জব্বার জয়। আরেকজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ( অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) মোঃ আবু সালাম চৌধুরী। বাকি দুইজনকেও আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য: কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের হোটেল থেকে বুধবার রাত দেড়টার দিকে এক নারীকে উদ্ধার করা হয়।
ওই নারী টিটিএন কে জানান, তিনি স্বামী ও আট মাসের সন্তানসহ বুধবার বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে যান। সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে কথা-কাটাকাটি হয়। সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার সন্তান ও স্বামীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আরেকটি অটোরিকশায় তাকে তুলে নেয় তিন যুবক। একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে তারা তাকে ধর্ষণ করেন।
এরপর তাকে জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তারা তাকে আবার ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি কাউকে জানালে স্বামী-সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে তাকে ঘরে বন্ধ করে চলে যান। পরে তিনি জানালা দিয়ে এক যুবকের সাহায্য নিয়ে নিজেকে উদ্ধার করেন। র্যাবের সহায়তায় তার স্বামী-সন্তানকে পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর জিয়া গেস্ট ইনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে র্যাব।
এতে দেখা যায়, তিন যুবক অটোরিকশায় এক নারীকে নিয়ে আসেন। দুজন ওই নারীর সঙ্গে থাকেন। আরেকজন হোটেলের রুম বুকিং দেন। সে সময় রিসিপশনে হোটেলের ব্যবস্থাপক ছোটন ছিলেন। এরপর তিন যুবক ওই নারীকে নিয়ে ওপরে চলে যান। রাত সাড়ে ১০টার দিকে যুবকরা বেরিয়ে গেলেও ওই নারীকে নামতে দেখা যায়নি।
র্যাব জানায়, এই ফুটেজ থেকে দুজনকে শনাক্তের পর ওই নারীকে তাদের ছবি দেখানো হয়। তিনি তাদের চিনতে পেরেছেন।
কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার টিটিএন কে বলেন, ‘এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই নারী মামলা করবেন। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
পাঠকের মতামত: