কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার কারাগারে ২ ইয়াবা কারবারি গ্রুপের মারামারি

কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দি আত্মস্বীকৃত শীর্ষ ইয়াবা কারবারি শাহজাহান আনসারী এবং টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা কারবারি এনামুল হক এনাম গ্রুপের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে। কারাগারে সিট, খাবার বেচা কেনা ও টাকার লেনদেন নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় কারাগারে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খবর কারাগারের একটি নির্ভরশীল সূত্রের। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে কারা সুপার মোকাম্মেল হোসেন দাবি করেন, টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। কেউ আহত হননি।

জানা গেছে, গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর কাছে ইয়াবা ও অস্ত্র জমা দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ও আত্মস্বীকৃত ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন।

আত্মসমর্পণ করা ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ীর মধ্যে ২৯ জন ইয়াবা গডফাদারও রয়েছেন। আত্মসমর্পণের পর তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়। আত্মসমর্পণকালে তারা ৩ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা ও ৩০টি দেশীয় অস্ত্র জমা দেন।

আত্মসমর্পণের পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন দুই শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী। তারা হলেন, টেকনাফ সদরের ইউপি সদস্য বহুল আলোচিত এনামুল হক ও মো. সিরাজ। এঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। ওইদিন ১০২ ইয়াবা কারবারীকে আদালতের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন। সেই থেকে তারা কারাগারে আছেন।

এদিকে, একটি নির্ভরশীল সূত্রে জানা গেছে, কারান্তরীন শীর্ষ ১০২ ইয়াবা কারবারির মধ্যে কক্সবাজার সদরের বাসটার্মিনাল লারপাড়ার বাসিন্দা ইয়াবা গডফাদার শাহজাহান আনসারী এবং টেকনাফ সদর ইউপি সদস্য এনামুল হক দুটো গ্রুপ সৃষ্টি করেন কারাগারে। এক গ্রুপে ১৮ জন এবং আরেক গ্রুপে ২০ জন।
এই দুটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার, সিট ও খাবার বেচা কেনা এবং টাকার লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মারামারি এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেসময় পুরো কারাগারে বন্দিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। উভয় পক্ষে ১০/১২ জন আহত হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

কক্সবাজার জেলসুপার মোকাম্মেল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে আছে। কেউ আহত হয়নি। উভয় পক্ষকে নিয়ে মিমাংসা করা চেষ্টা করা হয়েছে।

সচেতন মহলের মতে, কক্সবাজার জেলা কারাগারের বন্দি আছে অন্তত দেড় শতাধিক ইয়াবা গডফাদার। তারা সেখানে সিন্ডিকেট করে আয়েশি জীবন কাটাচ্ছে। কেউ কেউ গ্রুপ সৃষ্টি করে জেলের ভেতর বিভিন্নভাবে বাণিজ্যেও মেতেছেন।

কারাগারের পরিবেশ শান্ত ও ভাবমূর্তি রক্ষার্থে কারান্তরীণ শীর্ষ ১০২ ইয়াবা কারবারিদেরকে দেশের বিভিন্ন কারাগারে স্থানান্তর খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। শীর্ষ ইয়াবা কারবারীদেরকে কারাগারে একই জায়গায় রাখায় তারা কেউ কাউকে ছাড় দেয় না, ইয়াবা টাকার গরমে প্রতিনিয়ত চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে সামনে বড় কোন দুর্ঘটনা সামাল দিতে ব্যর্থ হতে পারেন কারা কর্তৃপক্ষ এমন আশংকাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না সচেতন মহল। সূত্র: প্রতিদিনের সংবাদ

পাঠকের মতামত: