কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কক্সবাজার সৈকতে ফিরেছে ডলফিন, করছে উল্লাস

সোহেল রানা, কক্সবাজার:: 

ডলফিনরা ফিরে আসছে সমুদ্র সৈকতে। তারা দলবেঁধে উল্লাস করছে। নির্ভয়ে সাঁতার কাটছে। কখনও লাফ দিয়ে আকাশ ছোঁয়ার চেষ্টা করছে। এ এক অতি অভূতপূর্ব দৃশ্য। যা গেল কয়েক দশকে আমাদের দেখার সৌভাগ্য হয়নি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ডলফিনদের ফিরে আসার এমন মনমুগ্ধ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে কয়েকদিন ধরেই। শুধুই কি ডলফিন, সাগরের আরো সব প্রাণীরও এখন অবাধ বিচরণ। তাহলে এমন ঘটনার কারণটা কী?

এক কথায় করোনাভাইরাস মহামারি। গোটা বিশ্বই এখন করোনার ছোবলে লণ্ডভণ্ড। প্রতিদিনই প্রাণহানির রেকর্ড ভাঙছে কোনো না কোনো দেশ। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে হাজারো মানুষ। গরীব দেশ নয়, আক্রান্ত হয়েছে সুপারপাওয়ার দেশগুলো। সুপারপাওয়ার চীন থেকে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস ইউরোপ তছনছ করে এবার ছোবল দিয়েছে বিশ্ব মোড়ল খ্যাত দেশ আমেরিকায়। আক্রান্ত আর মৃত্যুতে সবার শীর্ষে এখন ট্রাম্পের দেশ।

করোনার মহামারি অতীতের সব ধরনের মহামারির ভয়াবহতাকে ছাপিয়ে গেছে। বিশেষ করে আজকের জ্ঞান-বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতির এই বিশ্বে। করোনা মহামারি ঠেকাতে দেশে দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গোটা বিশ্বই হয়ে পড়েছে কোয়ারেন্টাইন। ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে বিশ্ববাসী। ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশে দেশে বাধ্যতামূলকভাবে ঘরে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে।

আর এই সুযোগে গোটা বিশ্বের চিত্রই পাল্টে গেছে। নগরগুলো থমকে গেছে। কোথাও কোলাহল নেই। শূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে সড়ক, মহাসড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে। কোনো তাড়া নেই, নেই উত্তেজনা। উন্মাদের মতো অসংখ্য যানবাহনের দিকবিদিক ছুটে চলা নেই। আকাশে কোনো বিমানের উড়াউড়ি নেই। ধোঁয়া নেই, কার্বন ডাই-অক্সাইড নেই।

আর সবচেয়ে বড় কথা, পর্যটন এলাকাগুলো শূন্য খাঁ খাঁ করছে। বিশেষ করে সমুদ্র সৈকতে কোনো পর্যটন নেই। যেদিকে দুচোখ যায় ধূ ধূ প্রান্তর। আর এই সুযোগে সামুদ্রিক প্রাণীরা ভয় ভেঙে এসে পড়েছে উপকূলে। পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে একদল ডলফিন ঘুরে বেড়াচ্ছে গত এক সপ্তাহ ধরে। কলাতলি ও হিমছড়ি পয়েন্টে নীল জলে লাফিয়ে লাফিয়ে খেলা করছে। কয়েকজন সার্ফারের ক্যামেরায় ধরে পড়ে তাদের উল্লাসের সে দৃশ্য।

স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক দশকে এমন দৃশ্য আমরা কখনও দেখিনি। বরং মৃত ডলফিন ভেসে আসতে দেখেছি। তবে জীবন্ত ডলফিন যে এমন উল্লাস করতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। তারা দাবি করছেন, কিছুদিন ধরে সৈকতে কোনো পর্যটক নেই। সৈকতের দূষণও নেই। একেবারেই অবাধ প্রাকৃতিক পরিবেশ। তাই তারা ফিরে এসেছে।

পাঠকের মতামত: