কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

চট্টগ্রামে এক মিনিটের ‘ফ্রি বাজার’ সেনাবাহিনীর

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম::

করোনা পরিস্থিতে দীর্ঘদিন ধরেই সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীলরা জনসচেতনতার পাশাপাশি নানাবিধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় ১৮টি পৃথক পেট্টোল টিমও করেছেন। জিওসি ২৪ পদাধিক ডিভিশন ও চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান জনগণের নিরাপত্তায় এসব কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে নির্দেশনা দিয়ে সবকিছু মনিটরিং করছেন প্রতিনিয়ত।

সেই ধারাবহিকতায় চট্টগ্রাম নগরীতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তালিকা করে গরীব-অসহায়, দিনমজুর এবং কর্মহীন মানুষদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রেখেই পাশে বিনামূল্যে ফ্রি সবজিসহ নিত্যপণ্য জিনিসপত্র দিচ্ছে সেনাবাহিনী। প্রতিদিন এক হাজার পরিবার মাত্র এক মিনিট অবস্থান করে এসব পণ্য নিতে পারবেন সেনাবাহিনীর ‘এক মিনিটের বাজার’ থেকে।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর ওয়াসা মোড়েরর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে প্রথম দিনের ‘এক মিনিটের বাজার’ শুরু হয়েছে।

তালিকায় থাকা আশপাশের এক হাজার দরিদ্র পরিবার এই বাজারে এসে বিনামূল্যে তাদের পছন্দের সবজি বাসায় নিয়ে যান। এক মিনিটের ফ্রি সবজির বাজারে বিনামূল্যে মাস্ক, সাবান, চালসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীও রয়েছে। গরীব-অসহায়রা এসব জিনিসপত্র নিয়ে হাসি-মুখেই বাড়ি ফিরছেন এমন দৃশ্যও দেখা গেছে।
সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজহার সিদ্দিকী বলেন, করোনা পরিস্থিতে কাজ করছেন সেনাবাহিনীও। গরীব অসহায়দের মধ্যে তালিকায় যাদের নাম লেখা হয়, তাদের একটি টোকেন দেওয়া হয়।

বাজারে ঢোকার সময় তারা সেই টোকেন দেখিয়ে পছন্দের সবজি ফ্রি নিয়ে যাচ্ছেন। এই ফ্রি সবজি বাজার চট্টগ্রামের প্রতিটি এলাকায় যাবে। আগামী এক মাস এলাকাভিত্তিক প্রতিদিন এক হাজার পরিবারকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ফ্রি সবজি দেওয়া হবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনসট্রাকশন বিগ্রেডের উদ্যোগে পরিচালিত এ বাজারের জন্য সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, সীতাকুন্ড, রাউজানসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্য প্রথমে সবজি কেনা হচ্ছে। এরপর এলাকাভিত্তিক দরিদ্র দিনমজুর পরিবারের তালিকা করে ‘এক মিনিটের বাজার’ এর মাধ্যমে এসব সবজি বিতরণ করা হচ্ছে। যে এলাকায় যাদের তালিকা করা হয়, তাদের পাশের কোনো এক সুবিধামতো জায়গায় এ ফ্রি সবজি বাজার বসানো হচ্ছে। এটা মাসব্যাপী চলবে। এছাড়াও চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় করোনা মোকাবেলায় হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত, জনসচেতনতা তৈরি, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত, বাজার মূল্যের ঊর্ধগতি নিয়ন্ত্রণে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে আসছে। এছাড়াও, সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে দুস্থ ও কর্মহীন পরিবারের মাঝে খাদ্য প্যাকেট সরবরাহ করে আসছে।

সদরদপ্তর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের মেজর আবু সাঈদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২৬ মার্চ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে সকাল-বিকাল পৃথকভাবে জনগণের নিরাপত্তার পাশাপাশি জনবসতি এলাকায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পাবর্ত্য চট্টগ্রামসহ চট্টগ্রামে সচেতনতামূলক প্রচারণায় প্রতিনিয়ত করা হচ্ছে মাইকিং।

তিনি বলেন, পৃথকভাবে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত পর্যন্ত নগরীতে ১১টি টিম কাজ করছেন। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি এতে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জীবাণুনাশক ছিটানোর কার্যক্রম ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সচেতনতামূলক কাজ করা হচ্ছে।

এর আগে জিওসি ২৪ পদাধিক ডিভিশন ও চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান জনগণের নিরাপত্তায় এসব কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তবে চট্টগ্রাম নগরীতে ১১টি টিম এবং জেলায় ৭টি টিমের সমন্বয়ে মোট ১৮টি পৃথক পেট্টোল টিম কাজ করছেন। একই কথা বললেন চট্টগ্রামের ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের দায়িত্বশীল মেজর তৌহিদও।

পাঠকের মতামত: