কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

চুক্তির ৩ বছরেও শুরু হয়নি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

চুক্তির ৩ বছরেও শুরু করা যায়নি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন। কারণ হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকার করছে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ওপর আর আস্থা রাখা যাচ্ছে না। উপায় আন্তর্জাতিক চাপ বাড়িয়ে বহুপাক্ষিক উদ্যোগ। তবে সেখানেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা হতাশাজনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ শুরুর পর ওই বছরই ২৩ নভেম্বর নাইপিদোতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে চুক্তি। কিন্তু কাগজে-কলমে করা চুক্তির বাস্তব কার্যকারিতা আসেনি এখনো। চুক্তি অনুযায়ী ৩ মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন শুরুর কথা।
এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে, তালিকাও প্রস্তুত করে দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ফল শূন্য। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, বার বার অঙ্গীকার করেছে যে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে। কিন্তু এখন আর কিছুই বলছে না। এখন আমাদের বন্ধ রাষ্ট্র চীন, জাপান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাওয়া বিষয়ে মিয়ারমারকে চাপ দেবে বলে জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ভরসা করছে প্রভাবশালী দেশগুলোর ওপর। কিন্তু চলতি সপ্তাহেই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে আনা প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে চীন, রাশিয়া। ভোটদানে বিরত থেকেছে ভারত, জাপানের মতো দেশ। সব মিলে তাদের সাম্প্রতিক ভূমিকা আশাবাদী করতে পারছে না বিশ্লেষকদের।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইসতিয়াজ আহমেদ বলেন, এই ধরনের বিষয় যখন ঘটে তখন দ্বিপাক্ষিক বিষয় আর থাকে না। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিষয়ে যে ধীরগতি দেখছি, সেটা ঠিক হচ্ছে না। এ ছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয় মিয়ানমারের নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক রূপ দিচ্ছে, এটা তো দুঃখজনক।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, তারা তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থকে গুরুত্ব দিচ্ছে, যেটা খুবই দুঃখজনক। মিয়ানমার প্রথমেই জানে যে চীন-ভারত তাদের পাশে থাকবে। তারপর আছে পশ্চিমা বিশ্বে বেশকিছু বাণিজ্যিক কোম্পানি, যাদের মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে।
মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচন শেষ হওয়ায় চীনের উদ্যোগে আগামী ডিসেম্বর মাসে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জাপানও সহযোগিতা করতে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সময়টিভি

পাঠকের মতামত: