কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

টিস্যু বক্সে বঙ্গবন্ধুর ছবি : খতিয়ে দেখতে কমিটি হচ্ছে

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) টিস্যু বক্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছাপানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ বিষয়ে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দোষীকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) মহাপরিচালক গোলাম ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, ‘এসএমএস টেকনোলজিস নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কিছু টিস্যু বক্স তৈরি করা হয়েছে। সেসব টিস্যু বক্সে বঙ্গবন্ধুর ছবি যুক্ত করা হয়েছে। এটি একটি অবমাননামূলক কাজ। এসব টিস্যু বক্সের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলো বিতরণ না করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এটি জানার পর এ কাজের পেছনে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত রয়েছে কি-না, তা খতিয়ে দেখতে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে তদন্ত কমিটিতে কে কে থাকবেন সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

টিস্যু বক্সে বঙ্গবন্ধুর ছবি দেয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস লিখেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তাতে লেখা হয়েছে, ‘মুজিববর্ষের লোগো অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে যত্রতত্রভাবে প্রিন্ট করার একটি ঘটনা, যা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে হয়েছে, তা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে এই প্রিন্টের বক্সগুলো বাজেয়াপ্ত করেছি এবং এর পেছনে কে সেটি জানাতে বলেছি। পরিকল্পিতভাবে এই কাজ করা হয়ে থাকলে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। আমাদের সমাজ, প্রশাসন, রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের সবখানেই অবিবেচক আর অতি উৎসাহের কোনো কমতি নেই।

‘পাশাপাশি অপরাজনৈতিক শক্তির দোসররা তো আছেই। এরা চাইবে যে কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে, বিতর্ক সৃষ্টি করতে। এই চ্যালেঞ্জটি আমাদের আছেই। এই বিশাল প্রশাসনের কোথায় কে কোন বিতর্ক ঘটিয়ে ফেলছে তা আগে থেকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আর ব্যবস্থা নিয়েই আমাদের এগোতে হবে।

স্ট্যাটাসে শিক্ষা উপমন্ত্রী আরও লিখেছেন, “সকলের অবগতির জন্য আমরা জানাচ্ছি ‘মুজিববর্ষের’ আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম ইত্যাদির দিক-নির্দেশনা দেয়ার জন্য একটি জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আছে। এই কমিটির প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। এই কমিটি কর্তৃক নির্দেশিত কাজের বাইরে কিছু করতে চাইলে আমাদের প্রাণপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, দুস্থ, গৃহহীন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কল্যাণমূলক কিছু করতে, যেমন তাদের জন্য গৃহনির্মাণ। এতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় তার সাধারণ মানুষের জন্য যেই সমান অধিকারের দেশ তিনি রেখে যেতে চেয়েছিলেন, তা বাস্তবায়নের পথে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব। সুতরাং অতি উৎসাহীরা সাবধান!

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টিস্যু বক্সে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যহারের কাজে বিভিন্ন জড়িত ছিলেন মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন), উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ও উপ-পরিচালক (বিশেষ)। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে মুজিববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শিক্ষামন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির মুখোশ পরে শিক্ষামন্ত্রীকে স্বাগত জানান। তবে এর প্রতিবাদ করেননি শিক্ষামন্ত্রী। এ নিয়ে গত ২ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ সভায় ডা. দীপু মনির ওপর বিরক্তি প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পাঠকের মতামত: