কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে: ফখরুল

আমরা গভীর সংকট পার করছি। বিগত কয়েববছর দেশে গণতন্ত্র নেই। কথা বলার অধিকার, সভাসমাবেশের অধিকার নেই। গ্রেপ্তার করে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর জেলে রাখছে। এই সরকার মুখে গণতন্ত্র বলে কিন্তু গণতন্ত্র তারা মানে না। পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রের মোড়কে একদলীয় শাসন কয়েম করছে। জনগনের সাথে প্রতারণা করছে। সরকার নিজেদের এজেন্ট দিয়ে ‘কুমিল্লার ঘটনা’ ঘটিয়ে সারাদেশে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করেছে। আন্দোলনকে ভিন্নপথে নিতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। আগামী নির্বাচন আওয়ামী সরকারের অধীনে নির্বাচনের ফাঁদে পা দিবে না বিএনপি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।

শনিবার (১৬ অক্টোবর) বিকালে কাজীর দেউড়িস্থ এপোলো শপিং সেন্টারের টাইম স্কয়ার কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।

সভায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় কর্মীসভায় প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।

মির্জা ফখরুল বলেন, হিন্দু ভাইদের দুর্গাপূজা, আমরা সবসময় এই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করি। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান যারা আছেন তাদের পাশে আমরা ভাইয়ের মতো দাঁড়াই সবসময়। বাবরি মসজিদের ঘটনার সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আমি তখন উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম। যখন বাবরি মসজিদের ঘটনা ঘটল, ডিসি আমাকে ফোন করলেন, আপনারা দ্রুত একটু আসুন, আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। ডিসি সাহেব বললেন, প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক জেলায় জেলায় ফোন করে বলেছেন, বাংলাদেশে কোথাও যেন সাম্প্রদায়িক সমস্যার সৃষ্টি না হয়। কোথাও যেন পূজামণ্ডপ অথবা মন্দির যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এভাবে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম, আমাদের সফল অর্জন সেদিন বাংলাদেশের কোথাও আমরা কোনো ঘটনা ঘটতে দিইনি। আর এরা কি করেছে ? এদের ভেতরে এজেন্ট আছে। তাদের এজেন্ট দিয়েই ঘটনা ঘটাবার জন্য কুমিল্লার কাজটি করেছে। ওইটার সূত্র ধরে চাঁদপুর, নোয়াখালী আর চট্টগ্রামে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করেছে।

ফখরুল বলেন, সরকারের কোনো গ্রহণযোগ্যতা কোথাও নেই। এরা মিথ্যা কথা বলে। একটাও সত্য কথা কোথাও বলে না। জনগণের সঙ্গে সবসময় এরা প্রতারণা করে এসেছে। গত নির্বাচন নিয়ে কথা বলে না এখন। নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলে না। বলে সার্চ কমিটি। ২০০৮ সালে অবৈধ মইনউদ্দিন ফখরুদ্দিনের সহায়তা নিয়ে ক্ষমতায় গেল। তারপর আদালতকে ব্যবহার করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করল।

প্রধান বক্তা মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, অতীতে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। কারণ জনগণ এ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করে ভোটকেন্দ্রে যায়নি। কারণ ভোট ডাকাত এই অবৈধ সরকারের উপর জনগণের কোনো আস্থা নেই। জনগণ সরকারের পতন চাই, এই ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্তি পেতে চাই। বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। খালেদা জিয়া মুক্ত হলে গনতন্ত্র মুক্তি পাবে। তাই এই ফ্যাসিবাদ ভোট ডাকাত সরকারের পতন ঘটিয়ে, দেশে গনতন্ত্র ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। তার জন্য বীর চট্টলার মানুষ প্রস্তুত রয়েছে। যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে অতীতের মতো আগামীতে চট্টগ্রামের মানুষ অগ্র বাগে থাকবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারের গ্রহণযোগ্যতা নেই। এই সরকারের অধীনে সার্চ কমিটি হতে পারে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। সার্চ কমিটি যাকে পছন্দ তাকে দিয়ে করবেন। নির্বাচনের আগের দিন ভোট হয়ে যাবে। সেটা হবে না। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই মামলা দিচ্ছে সরকার। সরকারের এই ঘোলা পানিতে মাছ শিকার জনগণ বুঝে গেছে। নির্বাচন নির্বাচন খেলা হতে দেওয়া হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চারটি নির্বাচন হয়েছে। সে নির্বাচনগুলো নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠেনি। তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একবার আওয়ামীলীগও নির্বাচিত হয়েছিল।

বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, সচিব মোস্তাক আহমেদ খান, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মো. মিয়া ভোলা, এড. আবদুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন ও ইয়াছিন চৌধুরী লিটন প্রমুখ

পাঠকের মতামত: