কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

করোনা নিয়ে আইসিসি বাংলাদেশের বিবৃতি

দেশের ব্যাংকিং খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে

নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশ। গতকাল এক সংবাদ বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।

আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ১১ মার্চ করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে বিশ্বমহামারী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এ ভাইরাস এরই মধ্যে ১৭০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ৩ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এ সংখ্যা থেকে যদিও যথাযথভাবে এই দুর্যোগের মাত্রা এবং এর ফলে যে বিশ্ব সংকটের সৃষ্টি হবে, তার প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে না। তবে এ মহামারী-পরবর্তী যে সংকট তৈরি হবে তা বোঝার এবং অনুমান করার চেষ্টা করছেন অর্থনীতিবিদরা। প্রকৃতপক্ষে কেউই জানেন না আগামীকাল কী ঘটবে, তারপর কী হবে এবং আগামীতে সমাজ, সরকার, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতির কী পরিবর্তন ঘটবে।

এটা নিশ্চিত করেই বলা যায় যে প্রান্তিক ও উদীয়মান অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আইসিসি বাংলাদেশ বলছে, করোনার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটাতে পারে, যেহেতু বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের ৭০ শতাংশেরও বেশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোয় যায়। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে দেশের রফতানি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ২৬ দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৭ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। রফতানির এই নিম্নমুখী ধারা সামনের দিনগুলোয় আরো বেড়ে যেতে পারে। অন্যদিকে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার এবং সরবরাহ চেইনের বড় দাতা; যা রফতানি, আমদানি ও উৎপাদনের জোগান দেয়।

উৎপাদন, সরবরাহ চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও বাজার বিপর্যয় এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, অর্থনৈতিক বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে সংগঠনটি বলছে, অর্থনৈতিক খাত বিশেষত বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) কমে যেতে পারে।

করোনার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণের সময় এখনো হয়নি। কেননা প্রতিদিনই নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে এমন মত জানিয়ে আইসিসি বাংলাদেশ বলছে, সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রাক্কলন দিয়ে কেবল ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা বোঝানো যেতে পারে। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নির্ভর করবে সংক্রমণের বিস্তার ও এর স্থায়িত্ব এবং নীতিনির্ধারকরা স্বাস্থ্যগত ও অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি উপশমে কত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে তার ওপর।

আইসিসি বাংলাদেশ বিশ্বাস করে দ্রুততম সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ার ফলে দেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে এবং চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। সংগঠনটি বলছে, করোনার ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতা মোকাবেলা করার জন্য সরকার ও ব্যবসায়ী মহলকে সর্বোচ্চ নীতি কাঠামোতে একমত হতে হবে। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করি যে এ ধরনের দুর্যোগ (যার কোনো ভৌগোলিক সীমারেখা নেই) মোকাবেলায় কেবল সমন্বিত পদক্ষেপই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

আইসিসি বাংলাদেশ বলছে, এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আমরা নীতিনির্ধারকদের তাগিদ দিচ্ছি তাদের নেতৃত্বে সরকারি ও বেসরকারি খাতের নেতাদের একত্র করার জন্য। অতীতে বাংলাদেশ অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগ সফলতার সঙ্গে মোকাবেলা করেছে এবং আমরা আশা করি এ দুর্যোগও  সাহস ও সহিষ্ণুতার সঙ্গে উতরাতে সক্ষম হবে।

উখিয়া বার্তা ডটকম  

পাঠকের মতামত: