কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বিশ্ব হয়তো কোনদিনও করোনামুক্ত হবে না: ডব্লিউএইচও

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) আশঙ্কা করছে, পৃথিবী থেকে কোনদিনও করোনা নির্মূল নাও হতে পারে। বুধবার জেনেভায় নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ মাইক রায়ান অতীতের অভিজ্ঞাকে সঙ্গী করে বলেন, টিকা উদ্ভাবন করেও অনেক সংক্রামক রোগই নির্মূল করা যায়নি। সে কারণে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ‘ব্যাপক প্রচেষ্টার’ তাগিদ দিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে বিশ্ব জুড়ে শনাক্ত হয়েছে ৪৩ লাখের বেশি মানুষ। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল পর্যন্ত এই ভাইরাসটি প্রায় তিন লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়।

করোনার টিকা উদ্ভাবনে বর্তমানে বিশ্ব জুড়ে একশ’টিরও বেশি সম্ভাব্য প্রচেষ্টা চলছে জানিয়ে বুধবার ডব্লিউএইচও বিশেষজ্ঞ মাইক রায়ান স্মরণ করিয়ে দেন যে, হামের মতো অন্য রোগগুলোর টিকা উদ্ভাবনের পরও সেগুলো নির্মূল করা যায়নি। করোনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আলোচনায় রাখা জরুরি যে: এই ভাইরাসটি হয়তো কেবল আমাদের জনগোষ্ঠীর মধ্যে আরেকটি আঞ্চলিক মহামারিতে পরিণত হতে যাচ্ছে, আর হয়তো কখনোই ভাইরাসটি নির্মূল হবে না।’ তিনি বলেন, ‘এইচআইভি নির্মূল হয়নি- কিন্তু আমাদের ভাইরাসটিকে মেনে নিতে হয়েছে।’ করোনা কখন নির্মূল হবে তা কেউই জানে না বলে নিজের বিশ্বাসের কথা জানান রায়ান।

তবে উদ্যোগ নেওয়া হলে ভাইরাসটি এখনও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে মনে করেন ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসিস। তিনি বলেন, ‘কৌশল আমাদের হাতে, দায়িত্ব সবার আর বিশ্ব জোড়া এই মহামারি অবসানে আমাদের সবারই অবদান রাখা উচিত।’ অনলাইন ব্রিফিংয়ে ডব্লিউএইচও’র এপিডেমিওলোজিস্ট মারিয়া ভ্যান কেরকোহব বলেন, ‘আমাদের মানসিকতার মধ্যে এটা নিয়ে নেওয়া দরকার যে, এই মহামারির অবসান হতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে।’

করোনাভাইরাসের নিয়ন্ত্রণ রোধে আরোপ করা বিধিনিষেধের কারণে বিশ্ব জুড়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অচল হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি দেশ ধারাবাহিকভাবে লকডাউন শিথিল করা শুরু করেছে। এছাড়া  নিজ নিজ দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কিভাবে ও কখন আবারও শুরু করা যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন বিভিন্ন দেশের নেতারা।

দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়িয়ে বিধিনিষেধ শিথিল করার কোনও উপায় নেই বলে সতর্ক করেন ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসিস। তিনি বলেন, ‘অনেক দেশ ভিন্ন ভিন্ন পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করতে পারে। তবে এখনও আমাদের সুপারিশ হলো যে কোনও দেশেরই সম্ভাব্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।’ ড. মাইক রায়ান বলেন, ‘কেউ কেউ যাদুকরী চিন্তাভাবনায় মনে করছেন লকডাউন যথাযথভাবে কাজে এসেছে আর তা প্রত্যাহার হলেও ভালোভাবে কাজ করবে। এ দুটি চিন্তায় বিপদের আশঙ্কায় পূর্ণ।’

পাঠকের মতামত: