কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা পেতে বিশ্ব সম্মেলন ২২ অক্টোবর

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তার বিষয়ে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর বিশ্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২২ অক্টোবর।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা যৌথভাবে এর আয়োজন করেছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশ্রয়দানকারী দেশগুলোর জন্য সহায়তা দানে বিভিন্ন সংস্থাকে উৎসাহিত করাই এই ভার্চুয়াল সম্মেলনের লক্ষ্য।

সম্মেলনটি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন সময় সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলবে। আয়োজনটি হবে www.rohingyaconference.org লিংকে।

ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এই তথ্য উল্লেখ করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা কার্যক্রমে অর্থায়নের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে, যা এ বছর এখন পর্যন্ত চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম। শরণার্থী, আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠী ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাস্তুহারা জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দানের লক্ষ্যে জরুরিভাবে অর্থায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানাবে সম্মেলনের আয়োজকরা।

২০১৭ সালের আগস্টে শুরু হয় রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট। তখন থেকে তাদের জন্য সহায়তা এসেছে। কিন্তু এবারের অনুদান আগের তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে দেওয়া পরিমাণের চেয়ে বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দেশের কাছে তাগিদ দেওয়া হবে বিশ্ব সম্মেলনে।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক চাহিদা পূরণে এ বছর জাতিসংঘ আরও ১০০ কোটি ডলার সহায়তার আবেদন জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এর পরিমাণ চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম। তাই অর্থায়নে ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তার আরও অবনতি হচ্ছে।

আগামী ২২ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনের লক্ষ্য হলো নিজভূমি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বা বাইরে অবস্থানরত নাজুক ও বাস্তুহারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় জরুরি তহবিল গঠন। গঠিত তহবিলের আওতায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল জুড়ে আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীর জন্য জরুরী সেবা কার্যক্রমেও সহায়তা দেয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্মেলনটির মাধ্যমে যৌথ আয়োজকদের জন্য এমন একটি সুযোগ সৃষ্টি হবে যেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও অন্যান্য বাস্তুহারা জনগোষ্ঠীর জন্য এই সংকটের টেকসই সমাধান হিসাবে তাদের নিজ দেশে বা পছন্দসই স্থানে স্বেচ্ছামূলক, নিরাপদ, সম্মানজনক ও স্থায়ীভাবে ফিরে যাবার আবশ্যকতার বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করা সম্ভব হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ই. বিগান বলেন, “আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংকট মোকাবেলায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ও অন্যান্য বাস্তুহারা জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই সহায়তা প্রদান করার এ আহবানে থাকতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত। নতুন দাতাদেশসহ অন্যান্য সবাইকে তহবিল প্রদানের আহ্বান জানাই।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডমিনিক রাব বলেন, “ভয়াবহ বর্বরতার শিকার হয়ে এবং কল্পনাতীত খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল। এই সুপরিকল্পিত সহিংসতার হোতাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাসহ আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছি এবং এই অপরাধের জন্য আমরা তাদেরকে অব্যাহতভাবে দায়ী করে যাবো। তাদের দুর্দশায় সারা বিশ্বকে জাগ্রত হতে হবে এবং জীবন বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সংকট ব্যবস্থাপনা বিষয়ক ইউরোপীয় কমিশনার জ্যানেন লেনার্সিক বলেন, এই সংকটময় কালে আরো বেশি সহায়তার আহ্বান নিয়ে এগিয়ে যেতে অঙ্গীকারবদ্ধ। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য স্বেচ্ছামূলক, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই সমাধানে পৌঁছাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে আরো জোরদার করা আবশ্যক।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি সংহতি প্রকাশের অর্থ শুধু তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানো নয়। অন্য সকলের মতো শরণার্থীদেরও রয়েছে সম্মানজনক জীবন এবং নিরাপদ ও স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ পাবার অধিকার।

পাঠকের মতামত: