কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

রোহিঙ্গাবিষয়ক দূত নিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রকে ঢাকার আহ্বান

রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এবং তাদের কার্যকর প্রত্যাবাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্বের ভূমিকায় আসার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে মঙ্গলবার এক টেলিফোন আলোচনায় এ আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুুল মোমেন।
গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সুপারিশ করেছেন, বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য মিয়ানমারকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাবিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ করতে পারে।
তিন দিনের সফরে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। ব্লিনকেনের সঙ্গে তার সরাসরি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও ‘কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধির’ কারণে তা
টেলিফোন আলাপে সীমাবদ্ধ করা হয় বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেনÑ যুক্তরাষ্ট্রের উচিত রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে নেতৃত্বের ভূমিকায় আসা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করতে উদ্যোগী হওয়া, যাতে টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর যথেষ্ট রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা সম্ভব হয়।
মিয়ানমারের কয়েকজন ব্যক্তির ওপর অবরোধ আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেশটির ওপর কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ এবং সেখান থেকে জিএসপি সুবিধা উঠিয়ে নেওয়ার কথাও বলেছেন ড. মোমেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মিয়ানমারে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতেও দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের বিষয়টি উঠে আসার কথা জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, দুই নেতা বার্মা, রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান এবং শ্রম ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন।
রোহিঙ্গা সংকটের বাইরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো, করোনা ভাইরাসপরবর্তী সময়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারসহ কৌশলগত বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে আলোচনা হয়।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেক্রেটারি ব্লিনকেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন অর্থনৈতিক সহযোগিতা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। দুই মন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়া ও বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে ওই টেলিফোন আলাপের পর এক টুইটবার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন লেখেনÑ আমরা নিশ্চিত যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক শক্তিশালী ও স্থায়ী। দক্ষিণ এশিয়ায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইন্দো-প্যাসিফিকে একসঙ্গে কাজ করার জন্য তাকিয়ে আছি। টুইটে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর শুভেচ্ছাও জানান।

পাঠকের মতামত: