কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে বড় দেশগুলোর সিদ্ধান্ত কৌশলগত’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন রোববার বলেছেন, রোহিঙ্গা বিষয়ে জাতিসঙ্ঘের রেজুলেশনে যেসব দেশ ভোট দিয়েছে এবং যারা এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে তাদের প্রতি কোনো অসন্তুষ্টি নেই। এটি দেশগুলোর কৌশলগত সিদ্ধান্ত।

মন্ত্রণালয়ের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘এটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত। আমরা এ ফলাফল নিয়ে খুশি।’

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ১৩০টি নয় মোট ১৩২টি দেশ এই রেজুলেশনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য একটি সাফল্য, বলেন তিনি।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ গৃহীত একটি খসড়া চীন ও রাশিয়া মিয়ানমারের পক্ষ্যে ভোট দিয়েছে এবং ভারত ও জাপান ভোট দেয়ার থেকে বিরত রয়েছে।

রাশিয়া, চীন, বেলারুশ, কম্বোডিয়া, লাওস, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, জিম্বাবুয়ে এবং মিয়ানমার এই ৯টি দেশ এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ও মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দিয়েছে।

ড. মোমেন বলেন, ‘যেসব দেশ রেজুলেশনের বিরোধীতা করেছে তারা আরও ভালো ভূমিকা রাখতে পারত। তবে তাদের প্রতি আামদের কোনো অসন্তুষ্টি নেই।’

ভারত, জাপান, শ্রীলঙ্কা ও সিঙ্গাপুরসহ মোট ২৬টি দেশ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত প্রস্তাবটির উপর ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল।

জাতিসঙ্ঘের ৭৫তম সাধারণ অধিবেশনের আগে বৃহস্পতিবার এই প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়।

ড. মোমেন বলেন, সিদ্ধান্ত দেয়ার আগেই তারা আমাদের সাথে কথা বলেছে বলে আমরা সন্তুষ্ট। এ সংঙ্কট সমাধানের পথ খুঁজতে মিয়ানমারের উপর তাদের উদ্দেশ্য কাজে লাগাতে জাতিসংঘে তারা নিরপেক্ষ থাকতে চেয়েছিলেন।

সম্প্রতি ভারত বলেছে, রাখাইন রাজ্যে সামরিক স্তরের স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের সর্বোচ্চ স্তর এবং সর্বোচ্চ সামরিক স্তরসহ প্রতিটি স্তরে থাকাদের তাদের অবস্থান পরিষ্কার করার দাবি জানিয়েছে।

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে তারা মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সাথে এবং সরকারি পর্যায়ে সরাসরি যোগাযোগ করছেন।

সমাধানের জন্য ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সাথে নিয়ে চেষ্টা করছে চীন।

ড. মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা এ বছর প্রত্যাবাসন শুরু করার আশা করছি। এটি আমাদের প্রত্যাশা।

প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হওয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বছর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে চাই। আপনি বারবার বলে আসছেন যাচাই-বাছাই শেষে এবং নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করে তাদের ফিরিয়ে নেবেন। আপনাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আপনারা বাস্তবায়ন করবেন বলে প্রত্যাশা করছি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো অগ্রগতি নেই এবং এবং নববর্ষে আমরা আশা করি যে আপনারা আপনাদের কথা রাখবেন।’

ঐতিহাসিকভাবে ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ অবতারণা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নেবে যদিও অতীতের তুলনায় এবারের সংখ্যাটি অনেক বেশি।

বাংলাদেশ মনে করে রোহিঙ্গাদের যদি ফিরিয়ে না নেয়া হয়, তবে তারা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে।শান্তি ছাড়া কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়, বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।সূত্র : ইউএনবি/ নয়াদিগন্ত

পাঠকের মতামত: