কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয়হীনদের দ্রুত ভাসানচরে স্থানান্তরের পরামর্শ

একেতো সরু রাস্তা, প্লাস্টিকের ত্রিপলের তৈরি ছাপড়া ঘর, তার ওপর প্রতি ঘরে একটা করে গ্যাস সিলিন্ডার। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন ছড়িয়েছে বোমা বিস্ফোরণের মতো। পানির রিজার্ভার না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চরম বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে। আশ্রয়হারা এই মানুষগুলোকে দ্রুত পুনর্বাসন করতে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার (২২ মার্চ) বিকেল ৩টায় কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ৮-ডব্লিউ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
পরে আগুন ক্যাম্পটির লাগোয়া ৮-এইচ, ৯ ও ১০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় আগুনে মারা যান নারী ও শিশুসহ ৭ জন। আহত হন ২ জন। দীর্ঘ ৭ ঘণ্টারও বেশি সময় পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিভাতে কাজ করে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি।

কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ার বিস্তৃর্ণ পাহাড়ি অঞ্চলে রোহিঙ্গা আবাস্থলগুলো গড়ে উঠেছে মূলত প্লাষ্টিকের তৈরি ত্রিপল দিয়ে। সে সাথে রয়েছে বাঁশের ব্যবহার। সব কিছুই আগুন ছড়ানোর সহায়ক। যে কারণে সোমবার বিকেলে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে। আর নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসকে৷

চট্টগ্রাম বিভাগ ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আজিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের পানিবাহী গাড়িগুলো রাস্তা সরু এবং চিকন হওয়ার কারণে আগুনের লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে পারিনি। সব জায়গায় যাইতে পারি নাই। ক্যাম্পের কাছে নিচু স্থানে পুকুর খনন করে পানি ভরাট করে রাখতে হবে। যাতে আপদকালীন সেই পানি ব্যবহার করে আমরা অগ্নি নির্বাপণ করতে পারি।
এ আগুনে গৃহহীন হওয়া ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন ব্যয় সাপেক্ষ। তাই খরচ কমানোর পাশাপাশি ঝুঁকিমুক্ত রাখতে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

রোহিঙ্গা বিষয়ক গবেষক প্রফেসর ড. জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, নতুন করে আবার বাসস্থান তৈরি করার জন্য যে অর্থ খরচ হবে, সেটা না করে রোহিঙ্গার যাতে আরও একটু ভালো থাকতে পারে, সেজন্য ভাসানচরে তাদেরকে নিয়ে যেয়ে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া উচিত।
আশির দশক থেকেই এখানে রোহিঙ্গা বসতি গড়ে উঠে। এর মাঝে ২০১৭ সালে ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গা সেনাবিহিনীর নিযাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে অবস্থান নেয় কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায়। সময়টিভি

পাঠকের মতামত: