কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

রোহিঙ্গা নারী পাচারে ঢাকা কেন্দ্রিক ৬ জনের সিন্ডিকেট সক্রিয়

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা

মিয়ানমার থেকে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে ঢাকা কেন্দ্রিক ৫/৬ জনের একটি শক্তিশালী মানবপাচার সিন্ডিকেট এখন বেশ সক্রিয় রয়েছে। এদের টার্গেট রোহিঙ্গা সুদর্শনা যুবতী, কিশোরী ও নারী। চিহ্নিত এক শ্রেণির রোহিঙ্গা পাচারকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে উক্ত সিন্ডিকেট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখকে ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গা কিশোরী, যুবতী, নারীদের নিয় পাচার অব্যাহত রেখেছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে জেলা প্রশাসনের নিয়োগকৃত প্রথম শ্রেণির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরফাত হোসেন একথা বলেন।

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর সকাল ১১ টার দিকে উখিয়া উপজেলা পরিষদে সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) সহযোগিতায় এনজিও সংস্থা ইয়ং পাওয়ার ইন সোসিয়াল এ্যাকশন (ইপসা) কর্তৃক আয়োজিত সভায় তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক মানবপাচারের মতো গর্হিত কাজে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তারা ঢাকা কেন্দ্রিক নারী পাচারকারী সিন্ডিকেটের কাছে কিশোরী, নারী, যুবতীদের ক্যাম্প থেকে নিয়ে তুলে দিচ্ছে। এমনকি সুন্দরী হলে স্বামী রয়েছে এমন রোহিঙ্গা নারীদেরও ফুসলিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে রোহিঙ্গারা পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে তাদের সর্বস্ব হারাচ্ছে।

উখিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আমিনুল এহছান খানের সভাপতিত্বে Upazila counter trafficking committee (CTC) meeting এ prevention and response activists implimantation on Counter trafficking issue বিষয়ক এই সভায় ইপসা’র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিকু বড়ুয়া তার বক্তব্যে পাচারকারীদের কবল হতে উদ্ধার হওয়া ২২ জন নারী শিশুর একটি তালিকা প্রদর্শন করে বলেন, ইপসা মানব পাচার প্রতিরোধ ও পাচারকারীদের কবল থেকে উদ্ধার পাওয়া রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশুদের পূর্ণবাসন করছে।

সভার প্রধান অতিথি উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা পাচারকারী চক্র শরনার্থী ক্যাম্পে সুদৃঢ়ভাবে স্থান করে নিয়েছে। যে কারণে মানবপাচার দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, যারা রোহিঙ্গা পাচারকারীদের আশ্রয় দিয়ে সহযোগিতা করছে, তাদের খুঁজে বের করে কঠোর আইনের আওতায় আনা না হলে মানবপাচার কখনো বন্ধ করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, ঢাকা, রাজশাহী সহ দেশের উত্তরাঞ্চলে যেসব রোহিঙ্গা শরনার্থী আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে ওইসব রোহিঙ্গাদের উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হচ্ছে। পাচার হওয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল মানবপাচারকারীদের ধরতে বেশি সময় লাগবে না। এসব পাচারকারী চক্র রোহিঙ্গা নারীদের গার্মেন্টসে ও বিভিন্ন কারখানায় চাকুরীর প্রলোভন দিয়ে ঢাকায় নিয়ে যায়। পরে তাদের দিয়ে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয় বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
আবার কিছু সংখ্যক মানবপাচাকারী মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দিয়ে রোহিঙ্গাদের তাদের গন্তব্য স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের কয়েকদিন রাখার পর তাদের হাতে থাকা সহায় সম্পদ ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে পাচারকারীরা তাদের নির্মমভাবে তাড়িয়ে দেয়। বর্তমান মানবপাচারের ভয়ংকর অবস্থার পরিস্থিতি বর্ননা করতে গিয়ে তিনি বলেন, মানবপাচার আগের তুলনায় কিছুটা কমলেও রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প কেন্দ্রিক মানবপাচারকারীরা এখন আবার সুযোগ বুঝে সক্রিয় হয়ে উঠছে।

উক্ত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সরওয়ার আলম শাহীন, সাবেক সভাপতি রফিক উদ্দিন বাবুল প্রমুখ।

পাঠকের মতামত: