কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

ওয়েবিনারে বক্তারা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিলম্ব বিপদ বাড়াবে

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বহুমুখী ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। পর্যটন নগরী কক্সবাজারে এখন পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিলম্ব বিপদই বাড়াবে। সামাজিক-রাজনৈতিক এবং পরিবেশগত বহুমুখী বিপর্যয় এড়াতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন জরুরি।

‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা : সামাজিক-রাজনৈতিক ও পরিবেশগত দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) ইনস্টিটিউট ফর রিস্ক অ্যান্ড ডিজাস্টার রিডাকশন যৌথভাবে বৃহস্পতিবার রাতে এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারেরই নাগরিক। তাদের অধিকার আছে দেশে ফিরে যাওয়ার, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার।

মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকার কাজ করছে। তাদের প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক কমিউনিটিকে এগিয়ে আসতে হবে। ওয়েবিনারে ‘ইম্প্যাক্ট অব রোহিঙ্গা ইনফ্লাক্স ইন বাংলাদেশ অন লোকাল টু রিজিওনাল পিস অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারকে ওভাবে চাপ প্রয়োগ করছে না। এই সমস্যা সমাধানে যেসব দেশ জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে, তারা তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে, কিন্তু তারা এ বিষয়ে ইতস্তত করছে। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ওয়েবিনারে ‘রোহিঙ্গা ইনফ্লাক্স : ন্যাচারাল হ্যাজার্ডস ইন কক্সবাজার রিজিওন’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল।

তিনি বলেন, মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বহুমুখী ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। পর্যটন নগরী কক্সবাজার এখন পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে। প্রকৃতি, বাস্তুতন্ত্র সম্পূর্ণ ভারসাম্যহীন। রোহিঙ্গা প্রবাহের কারণে কক্সবাজারে বন উজাড় করে, পাহাড় কেটে অপরিকল্পিতভাবে আবাসন তৈরি হয়েছে। ফলে সেখানে ভূমি ক্ষয়, ভূমি ধস, বন্যা ও অগ্নিকান্ড সাধারণ ঘটনা হয়ে পড়েছে।
আরও প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মতিন উদ্দিন আহমেদ।
এ ছাড়াও ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম, ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক জিল্লুর রহমান, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) ডিজাস্টার রিডাকশন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক পিটার স্যামন্ডস, ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অরগানাইজেশনের (ফাও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন প্রমুখ।

প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. কাউসার আহাম্মদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসাইন এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) ডিজাস্টার রিডাকশন ইনস্টিটিউটের প্রভাষক বায়েস আহমেদ।

পাঠকের মতামত: