কক্সবাজার, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

সাগরে লঘুচাপ, ৪৮ ঘণ্টায় নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার শঙ্কা

দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব এখনও বঙ্গোপসাগরে পড়েনি। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এটি শক্তিশালী হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপরই বোঝা যাবে এটি বাংলাদেশের উপকূলের দিকে আসবে কিনা। আর এই নিম্নচাপ যদি আরও শক্তিশালী হয় তাহলে আবহাওয়ার স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ারও শঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় হলে এবার তার নাম হবে ‘অশনি’।

এদিকে বাংলাদেশের এই মৌসুমের আবহাওয়া অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপর দিয়ে বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য কিছু এলাকার নদীবন্দরকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত এবং কিছু এলাকায় ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সাগরের বিশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়, দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও আশেপাশের এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘণীভূত হতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে পরবর্তী নিদের্শনা পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে।

এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যম লিখছে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় অশনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, অনেকেই বলছে ঘূর্ণিঝড় অশনি আসছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আন্দামান সাগরে কেবল লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। সেক্ষেত্রে বোঝা যাবে এটির গতিপথ কোনদিকে। আর যদি নিম্নচাপ শক্তিশালী হয় তাহলে তা স্বাভাবিক নিয়মে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতেই পারে। তবে এসব কিছুই ঘটতে পাঁচ-ছয়দিন সময় লাগবে। এত আগেই এই পূর্বাভাস দেওয়া যায় না। তবে আপাতত সমুদ্রবন্দরগুলোকে আবহাওয়ার সতর্কবার্তা দেখে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আগামী ২৪ ঘন্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশের আকাশে অবস্থান করা পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সাথে প্রবল বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

একই কারণে নদীবন্দরের জন্য এর দেয়া বিশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, টাংগাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুমিল্লা এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া দেশের অন্য এলাকায় পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া দেশের অন্য এলাকায় পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেতের অর্থ হচ্ছে, বন্দর এলাকা ক্ষণস্থায়ী ঝড়ো আবহাওয়ার কবলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিবেগের কালবৈশাখী ক্ষেত্রেও এই সংকেত প্রদর্শিত হয়। এই সংকেত আবহাওয়ার চলতি অবস্থার উপর সতর্ক নজর রাখারও তাগিদ দেয়।
আর ২ নম্বর নৌ হুশিয়ারী সংকেতের অর্থ হচ্ছে,

বন্দর এলাকা নিম্নচাপের সমতূল্য তীব্রতার একটি ঝড় যার গতিবেগ ঘন্টায় অনুর্দ্ধ ৬১ কিলোমিটার বা একটি কালবৈশাখী ঝড়, যার বাতাসের গতিবেগ ৬১ কিলোমিটার বা তারচেয়ে বেশি। নৌ-যান এদের যে কোনটির কবলে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৬৫ ফুট বা তার কম দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট নৌ যানকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।

পাঠকের মতামত: