কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

সেন্টমার্টিনে ভ্রমণপিয়াসীদের উপচেপড়া ভিড়

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিয়াসী পর্যটকের ঢল নেমেছে। সরকারি ছুটির দিনে আনন্দ উদযাপন করতে বন্ধু, বান্ধব,বান্ধবী ও পরিবার নিকটজনদের নিয়ে পর্যটকেরা ছুটে আসছেন সেন্টমার্টিনে।

প্রতিদিন প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার পর্যটক দ্বীপের বিভিন্ন হোটেল মোটেল অবস্থান করছেন বলে জানা যায়। রাত্রিকালীন সমুদ্রের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ভোরের নির্মল হাওয়া উপভোগ, দ্বীপের নীল জলরাশি, শৈবাল, প্রবাল এবং জীবন্ত কোরাল দেখতে নদী-সাগর মধ্যে পাড়ি দিয়ে হাজার হাজার পর্যটক এখন সেন্টমার্টিনে অবস্থান করছেন।

ইতোমধ্যে দেখা গেছে, দ্বীপের শতাধিক আবাসিক হোটেল এবং কটেজসমূহ পর্যটকে প্রাণচঞ্চল। ছুটি কাটাতে আসা ওসব পর্যটকরা আগ থেকেই হোটেলের কক্ষ বুকিং দিয়ে রেখেছেন।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক হাসান আল-মামুন অভিযোগ করে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, এখান সাধারণ পর্যটকদের গলা জবো করার বাকি আছে,যে হোটেলের ভাড়া ২ হাজার ছিলো সেই হোটেলের ভাড়া ৪ থেকে ৫ হাজার নিচ্ছে। কিন্তু পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে এসে বিপাকে পড়ে গেছি। এটা যেন মুগের মুল্লুক হয়ে গেছে না-কি?

হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারনে গত এক বছর দরে সেন্টমার্টিনে কোন পর্যটক ছিলো না বললেই চলে। কিন্তু এবছরের শুরুতে উদ্যাপন করতে আগে থেকে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিনের হোটেল এবং কটেজে বুকিং দিয়ে রেখেছেন। এমনকি হোটেল-কটেজ পরিপূর্ণ হলে আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াডিতেই রাত কাটাচ্ছেন।

ব্রাহ্মণবাড়ীয়া থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক প্রিয়াংকা চক্রবর্তী ও তার পরিবার প্রতিদিনের সংবাদকে জানান বলেন, আমরা এই প্রথম সেনমার্টিনের দীপে এসেছি তার আগে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখেছি, কিন্তু আজকের এই দিনে সেনমার্টিনে আশার একটাই কারণ ছিলো।

সেটা হলো, আমার ভাই নতুন বিয়ে করায়,তার ইচ্ছে ছিলো সেন্টমার্টিনে এসে হানিমুন করবে,তার এই সুযোগে আমার পরিবার ও তার পরিবার এখানে এসেছে সমুদ্র সৈকত দেখতে।

সাতক্ষীরার জেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরের সেরা করদাতা মো. আজহারুল ইসলাম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে রাতযাপন করার শখ ছিল দীর্ঘদিনের। তাই পরিবার পরিজন নিয়ে উদযাপন করতে প্রবালদ্বীপে ছুটে এসেছি।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, সরকারি ছুটি থাকায়, বন্ধের দিনগুলো উদ্যাপন করতে ৭ হাজারেরও বেশি পর্যটক দ্বীপে এসেছেন। বছরের দিনগুলোকে স্মৃতিময় করতে এসব পর্যটক বৃহস্পতিবার এসে, শুক্রবার ও শনিবার পর্যন্ত প্রবালদ্বীপে অবস্থান করেন। অনেক পর্যটক হোটেল-কটেজে জায়গা না পেয়ে ইতিমধ্যে তাঁবু ভাড়া নিয়েছেন। যারা নিকটজনদের নিয়ে সৈকতের বালিয়াডিতে রাত কাটাবেন বলে জানা যায়।

টেকনাফস্থ ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে প্রতিদিন পুলিশ কাজ করছে। বিশেষ দিন পর্যটকরা যেন উদ্যাপন করতে পারেন সেজন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত আছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, সেন্ট মার্টিনে পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে অবস্থান করতে পারে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দ্বীপে অবস্থানকারী পর্যটকদের সুবিধার্থে প্রশাসনের বাড়তি নজরদারির পাশাপাশি সেখানকার জনপ্রতিনিধিদেরও সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া আছে।

পাঠকের মতামত: