কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

সড়ক যেন সরু গলি..

উখিয়ায় অসহনীয় যানজট

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মোস্তফা, উখিয়া বার্তা::

কক্সবাজার-টেকনাফ আরকান সড়ক যেন ঢাকা শহরের গলি। একদিকে প্রচণ্ড তাপমাত্রা অন্যদিকে যানজটে নাকাল মানুষ। যানজটে মানুষের দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না। যানজট উখিয়াবাসীর কাছে নতুন কিছু নয়। তবে কখনো কখনো সেই যানজট ছাড়িয়ে যায় অসহনীয়তার মাত্রায়, তাতে নিত্য যানজটে অভ্যস্ত উখিয়াবাসীকেও হিমশিম খেতে হয়।

সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে তেমনই যানজটের কবলে পড়ে নাকাল হতে হলো উখিয়াবাসীকে। দিনের শুরু থেকেই উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায় যানজট দেখা দেয়। বেলা গড়াতে তা অনেক এলাকাতেই অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছে যায়।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মাসে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে উখিয়ায় যানজট লেগেই আছে। সোমবার দুপুর থেকেই উখিয়া সদর স্টেশন, কোটবাজার, মরিচ্যাবাজার, কুতুপালং, বালুখালী পানবাজার ও থাইংখালী এলাকাগুলোয় যানজট শুরু হতে দেখা গেছে। বেলা ২টার দিকে কুতুপালং ক্যাম্পের সামনের রাস্তায় কথা হয় এক ট্রাকচালকের সঙ্গে। তিনি জানান, সাড়ে ১১টায় রওনা দিয়েছেন কক্সবাজার থেকে গন্তব্য বালুখালী ক্যাম্পে। ঘণ্টা দুয়েকেও তিনি কুতুপালং পার হতে পারেননি।

এক এনজিও কর্মী মৌসুমি জানান, কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে চাকরি করেন তিনি। থাকেন উখিয়ায়। বাড়ি তার রংপুর। অসুস্থ বান্ধবীকে দেখতে কক্সবাজারে এক প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়েছিলেন গত রাতে। সকাল ৮টার দিকে কক্সবাজার থেকে রওনা দিয়ে ক্যাম্পের অফিসে পৌঁছেছেন ১১টারও পর।
তিনি বলেন, অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে চাকরি টিকিয়ে রাখতে পারব কি না বলা মুশকিল। অথচ কক্সবাজার থেকে উখিয়া কুতুপালং পৌঁছতে আগে সময় লাগত ১ ঘণ্টা। এখন সময় লাগে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা। একই ধরনের চিত্র সকাল থেকেই ছিল কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কেও।

এ দিকে কোটবাজার থেকে বালুখালী পানবাজার পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশেই ছিল গাড়ির তীব্র চাপ। এ সময় ২০ মিনিটের রাস্তা পার হতে সময় লেগেছে এক-দেড় ঘণ্টা। বাড়তি চাপ দেখা গেছে কুতুপালং এলাকাতেও। কেবল যানজট নয়, কড়া রোদও এদিন সাথী হয়েছে। তাতে নাভিশ্বাস উঠেছে উখিয়াবাসীর। সড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ বলেন, সপ্তাহের প্রথম দিন হওয়ায় ক্যাম্পে এনজিওদের গাড়ির পাশাপাশি ঈদ কেনা-কাটায় স্বাভাবিকভাবে সড়কে যানবাহনে চাপ ছিল। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। কোটবাজার, উখিয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে থেমে থেমে চলছে গাড়ি। একটার সঙ্গে আরেকটা গাড়ি প্রায় লাগানো।

রোহিঙ্গাদের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে উখিয়াবাসী। এদিকে গত কয়েক দিন ধরেই দাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার মানুষ। আর গরমের প্রভাব দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রোগবালাই। অসুস্থ হয়ে মানুষ ছুড়ছে হাসপাতালে। বৃদ্ধ ও শিশুরা শিকার হচ্ছে অসহনীয় গরমের। ট্রাফিক জ্যামে আটকে পড়া মানুষ হাঁসফাঁস করে তাপের যন্ত্রণায়। একটু ছায়া একটু বাতাসের দিকে তাকিয়ে থাকে ভুক্তভোগীরা।

উখিয়র দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, যানজট নিরসনের জন্য ট্রাফিক পরিদর্শক, সার্জেন্ট, সহকারী ট্রাফিক সার্জেন্ট ও কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশও রয়েছে। কিন্তু সড়কের কাজ এবং রাস্তার উপর অবৈধ স্থাপনা থাকায় এই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: