কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও বাড়ছে!

 

আবারো বাড়ানো হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান সাধারণ ছুটি। সারাদেশেই চলছে মহামারি করোনার তাণ্ডব। শনাক্তের সংখ্যা কিছুটা কমে আসলেও এখনো সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশের উপরে। সরকারের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের বেশি থাকলে এবং সংশ্লিষ্টদের টিকা দেওয়া কার্যক্রম চলমান থাকায় আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চায় না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে পিছিয়ে পড়া পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

 

এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণের হার প্রত্যাশিত আকারে কমে না আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড রয়েছে। এছাড়া শ্রেণিকক্ষের পাঠদান উন্মুক্ত করতে সবাইকে টিকা দেওয়ার কাজও শেষ করা প্রয়োজন। সে কারনে চলমান ছুটি আরও বাড়ানো হতে পারে।

শিক্ষা মন্ত্রণায়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে চলমান ছুটি আরও এক মাস বাড়ানো হতে পারে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে এ বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।

এদিকে গত ১৮ আগস্ট শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তুত রয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পরিস্থিতি অনুকূল হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংক্রমণের হার যে পর্যায়ে এলে বিজ্ঞানস্মতভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যাবে সে সময় এলেই খুলে দেওয়া হবে।

এর আগে বুধবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সচিব সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে এলে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন।

সভায় উপস্থিত এক সচিব গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ব্যবস্থার কথা বলেছিলাম। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয় দ্রুত সময়ে স্কুলগুলোও খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। কারণ, শিশুরা ঘরে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তারা মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সব পদক্ষেপ নিতে হবে। সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ পর্যন্ত গত ১৭ মাসে দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি বাড়ানো হয়। করোনা সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় সবশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান সাধারণ ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এর আগে গত রোববার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলে আগামী নভেম্বরে এসএসসি এবং ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সংক্রমণের হার ১০ শতাংশে নেমে এলে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।

দীপু মনি বলেন, দেশের সামগ্রিক করোনার সংক্রমণ এখন নিম্নমুখী। যদিও সংক্রমণের হার এখনও ২০ শতাংশের ওপরে। আমরা আশা করছি এ হার ধীরে ধীরে কমে আসবে। তাই, পরিস্থিতি আরেকটু স্বাভাবিক হয়ে এলে প্রথমে এসএসসি, পরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা করেছি। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছে। এখন করোনার যে সংক্রমণের হার, মৃত্যুর হার, সবকিছু মিলিয়ে যে অবস্থা, সেসব বিবেচনায় কবে নাগাদ আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব সেটা বলার কোনো সুযোগ নেই।

পাঠকের মতামত: