কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

আর কত দীর্ঘ হবে মায়েদের অপেক্ষা

 

বছরের পর বছর যায় স্বজনের সন্ধান দেয় না কেউ
বছরের পর বছর যায় স্বজনের সন্ধান দেয় না কেউ। ছবি: আজকের পত্রিকা
দেশে গত ১০ বছরে ৫৭৮ জন মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ৩৩৩ জন ফিরে এসেছেন। বাকিদের এখানো কোনো হদিস নেই। মানবাধিকার সংগঠন এবং নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার বলছে, তাঁরা সবাই গুম হয়েছেন। জীবিত বা মৃত হলেও তাঁদের ফিরে পেতে চায় পরিবার। দীর্ঘদিন ধরে সেই দাবিই করে আসছেন তাঁরা।

আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে ‘গুম হওয়া পরিবার’ ব্যানারে আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মায়ের ডাক’ শীর্ষক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখানে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতি বছরের মতো তাঁরা আবারও স্বজন ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন।

২০১৩ সালে নিজ বাসা থেকে নিখোঁজ হন তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগের কাওছার হোসেন। তাঁর স্ত্রী শিমু আক্তার বলেন, ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর বাসা থেকে মাঝরাতে র‍্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায় তাঁকে। সেসময় তাঁরা বলেছিলেন জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিবে। কিন্তু আমার স্বামীকে তাঁরা ছাড়ে নাই। আজ পর্যন্তও আমার স্বামী ফিরেনি। ঘটনার পরে র‍্যাব, পুলিশ, ডিবি কত জায়গায় ঘুরলাম! কেউ স্বীকার করে না যে তাঁকে নিয়ে গেছে। প্রতিবছর এই দিনে এখানে আসি। স্বামীকে ফিরে চাই, তারপর চলে যাই।

শিমু আক্তার বলেন, ছোট মেয়েটা বাবাকে কখনো দেখেনি। ও যখন ওর বাবার কথা বলে আমি কিছু বলতে পারি না। এখনো জানতে পারলাম না আমার স্বামীর আসলেই কী অপরাধ।

কুষ্টিয়া থেকে আসা শাহেদ হোসেন তাঁর বাবা সাজ্জাদ হোসেনের সন্ধান চাইতে যোগ দিয়েছিলেন সমাবেশে। ২০১৫ সালে গাজীপুরে ড্রিম স্কয়ার রিসোর্টের সামনে থেকে সাজ্জাদ নিখোঁজ হন। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। তাঁর খোঁজে সম্ভাব্য সব জায়গায় চেষ্টা করেছেন শাহেদ হোসেন। এখন পর্যন্ত কেউ তাঁকে আশার বাণী দিতে পারেনি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, গুম তো ফৌজদারি অপরাধ। আবার অভিযোগ করতে গেলেও থানা-পুলিশ মামলা নেয় না। কেন নেয় না? কারণ অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধেই, মামলাটা নিবে কীভাবে।

মানবাধিকার কর্মী নূর খাঁন লিটন বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে গুম নিয়ে আলোচনা করতে হয়, এটা লজ্জার। তবে শুধু দেশে গুম না। অনেককে আবার এদেশে গুম করে অন্য দেশে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আমরা বারবার একটা স্বাধীন তদন্ত কমিটির সুপারিশ করেছি। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা বারবার বিষয়গুলো পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন।

পাঠকের মতামত: