কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

“ জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ” উখিয়ার সুস্থ ধারার রাজনীতির এক নিভৃতচারী স্বপ্নদ্রষ্টা

বিশেষ প্রতিনিধি :
স্বপ্ন হলো a series of thoughts, images, and sensations occurring in a person’s mind during sleep. স্বপ্ন বলতে বুঝি contemplate the possibility of doing something. একটি, শুধু একটি সুন্দর স্বপ্ন দেখা, সেই স্বপ্নকে পূরণ করবার জন্য মরিয়া হওয়া। চেষ্টা করলে, স্বপ্ন পূরণ হবেই। তাইতো স্বপ্ন পূরণের আগে একটি সুন্দর স্বপ্ন দেখাটা জরুরি।স্বপ্ন সেটাই, যেটা মানুষের কল্পনায় থাকে। কল্পনাতো আর এমনি এমনি আসে না। বাস্তবে যদি তার এতটুকু অস্তিত্ব না থাকে তাহলে মানুষ সেই স্বপ্নটি দেখে না। আমাদের প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখতে হয়। স্বপ্ন দেখে বাঁচি, স্বপ্ন পূরণের আশায় আমরা অবিরাম কাজ করি। আর আমাদের জীবনে কিছু কিছু স্বপ্নদ্রষ্টার প্রয়োজন হয়। যারা স্বপ্ন দেখিয়ে বেড়ান। কেউ প্রকাশ্যে আর কেউবা অন্তরালে।

তেমনি একজন স্বপ্নদ্রষ্টা উখিয়ার রাজনীতির আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। যিনি এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের সহযাত্রী রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা।

পিতা ছিলেন বরেণ্য রাজনীতিবিদ, উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, শিক্ষাবিদ, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম নুরুল ইসলাম চৌধুরী (প্রকাশ ঠান্ডা মিয়া)’।
২০০৪ সালের আজকের এই দিনে (২৩ মে) তিনি মৃত্যুবরণ করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালন কালীন সময়ে উখিয়ার অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষাক্ষেত্রের প্রসারে ভূমিকা রাখার কারণে সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি।

বাবার মতো তারঁ উত্তরসূরিরাও জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করছেন। বড় ছেলে হুমায়ুন কবির চৌধুরী দায়িত্ব পালন করছেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে, মেয়ে শাহীন আক্তার চৌধুরী দায়িত্ব পালন করছেন উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য হিসেবে।

ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, একাধারে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের পরপর দুবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান।

প্রয়াত এই জননেতার স্মৃতি ধরে রাখতে তাঁর সন্তানদের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে “নুরুল ইসলাম চৌধুরী স্মৃতি ফাউন্ডেশন”। প্রতি বছর এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে উখিয়ার বিপুল সংখ্যক মেধাবী ও কৃতি শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হয় শিক্ষা বৃত্তি।

উখিয়া উপজেলার গণমানুষের নেতা জননেতা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী’র এক নজরে রাজনৈতিক দৃশ্যপট ও শিক্ষা বিস্তারের অবদান।

আমৃত্যুকাল অবধি স্মরণে থাকবে আমাদের।

★রাজনৈতিনক পরিচয়ঃ
(১) ছাত্র জীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
(২) ১৭ জুলাই ২০০৪ ইং তারিখে বাংলাদেশ কৃষকলীগ উখিয়া উপজেলা শাখার সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।

(৩) ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ইং তারিখে রাজাপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর দের প্রত্যক্ষ ভোটে মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

(৪) ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ইং তারিখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উখিয়া উপজেলা শাখার কাউন্সিল ও সম্মেলনের কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং অদ্যাবধি সুনামের সাহিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

★জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনঃ
(১) মে ২০১১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে চার বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য ও কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি জনাব শাহজাহান চৌধুরীর ছোট ভাই জনাব শাহ কামাল চৌধুরী কে তিন হাজার (৩০০০) ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

(২) জুন ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কা প্রতীক নিয়ে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর ছেলে জনাব রাজিব চৌধুরীকে প্রায় পাঁচ হাজার (৫০০০) ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অদ্যাবধি সুনামের সাহিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

★ মুক্তিযুদ্ধ কালীন পরিবারের ভূমিকাঃ
উনার পিতা মোঃ ইসলাম চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। হালনাগাদ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই তালিকা উনার নাম প্রস্তাব করা হয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানের পাকিস্তানি সেনাবাহিনী উনার পৈত্রিক বাড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। উনি একজন তালিকাভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।

★শিক্ষা বিস্তারে অবদানঃ
১-নুরুল ইসলাম চৌধুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা।
২-নুরুল ইসলাম চৌধুরী গুলজার বেগম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা
৩- নুরুল ইসলাম চৌধুরী টেকনিক্যাল বিএম স্কুল এন্ড কলেজের আজীবন দাতা।
৪-বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের আজীবন দাতা।
৫- গুলজার বেগম চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা।
৬- জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা।
৭-নুরুল ইসলাম চৌধুরী স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজ উদ্যোগে প্রতিবছর উখিয়া উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণিতে ৭০ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করে যাচ্ছেন।

কবি স্বামী বিবেকানন্দের তার কবিতায় লিখেছেন,

“মানুষ চাই,মানুষ চাই,

তাহা হইলেই সব হইয়া যাইবে।”

আসলে উখিয়ার রাজনীতিতে আমাদের এমনই একজন মানবিক এবং সফল রাজনৈতিক দরকার যিনি সবই পারবেন, যিনি সবই করবেন সততা,স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে। তেমনি একজন মানুষ জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী । একজন নেতা হিসেবে তিনি যে রকম আদশর্বান মানুষ হিসেবে ঠিক সেরকমই মানবিক। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে উচ্চারিত হয়েছে,“একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসাবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পাকৃতির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা,যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।” জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর আদর্শে এবং রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন বলে তাঁর ভাবনায় মানুষ , মানুষ এবং মানুষ। এগিয়ে যান , ভাই। আপনার পেছনে আছে মানুষের ভালোবাসা। শুধু ভালোবাসা।আজ বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর স্বপ্ন, আদর্শ ও নির্দেশনা আজও আমাদের সঠিক পথ দেখায়।আর তাঁর দেখানো পথ ধরেই জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী মুক্তির পথে হাটছেন।

জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীকে ব্যক্তিগতভাবে যারা চিনেন, কাছ থেকে দেখছেন তারা একবাক্যেই বলবেন, তার মতো সৎ, নির্লোভ মানুষ উখিয়ার রাজনীতিতে খুঁজে পাওয়া কঠিন। যেখানে একজনের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে দুর্নীতি আর দুঃশাসনের উন্মত্ততায় মেতে ওঠে তার চারপাশের লোকেরা, সেই প্রেক্ষাপটে তাকে মূল্যায়ন করার মতো কোনো মাপকাঠি আমাদের জানা নেই। সৎ আদর্শের জন্য প্রতিনিয়ত অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। তার অনুসারীদেরও উদ্বুদ্ধ করেন সৎ ও ন্যায়-নিষ্ঠাবান হওয়ার জন্য। তিনি নিজে ক্ষমতার খুব কাছাকাছি থেকেও কোনো সুযোগ-সুবিধা নেননি। কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেননি। সর্বদা নিজস্ব বলয়ে থেকে নিজের যোগ্যতায় নিজ কর্মক্ষেত্রের পরিধিতে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে চলছেন। তিনি শুধু একজন মেধাবী আওয়ামী লীগ নেতাই নন, তিনি হলেন নিভৃতচারী, নীতিবান, নিরহংকার, নির্ভীক, স্পষ্টবাদী, দৃঢ়চেতা, দেশপ্রেমিক, আদর্শবান, সহজ-সরল, বিনয়ী, চরিত্রবান, যুক্তিবাদী, অজাতশত্রু ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন আদর্শ মানুষ।

ব্যক্তিজীবনে ক্ষমতার ভেতর থেকেও কখনও ক্ষমতার অপব্যবহারের সামান্যতম সুযোগ নেননি তিনি, যা তার জন্য খুব সহজ ছিল। তিনি আপন অবস্থানে থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্যার প্যাট্রিক গেডেসকে লিখেছিলেন -“I do not have faith in any new institutions but in the people who think properly, feel nobly, and act rightly.’

এই অসীম স্বপ্নচারী মানুষটিকে তাই উখিয়ার রাজনীতিতে বড় বেশী প্রয়োজন।কারন তিনি উখিয়ার রাজনৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব পালনে মানবতাবাদী, সমাজহিতৈষী, পরোপককারী খ্যাত। তিনি দোহারের পরিমন্ডলে সৎ আদর্শের রূপকার এবং স্বপ্নদ্রষ্টা। সামাজিক দায়বদ্ধতায় তাঁর কর্মক্ষেত্র অনেকের চেয়ে প্রসারিত। উখিয়ার যে কোন অধিকার আদায়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শামিল হতে দ্বিধাবোধ করেন না কখনই। রাজনৈতিক জীবনে তিনি অনেক জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে পিছ পা হন না। একজন ধর্মপ্রাণ, সৎ ও দক্ষ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তাঁর বেশ সুনাম। তিনি প্রতিনিয়ত মানবিক ও সমাজসেবামূলক কাজে অংশ গ্রহন করেন।একজন প্রগতিশীল আধ্যাত্মিক ইসলামী চিন্তাধারার মাানুষ হিসাবে কখনো কোন অন্য্যায় ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে হাত মেলাননি।

পাঠকের মতামত: