কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

যে কারণে ঘোল মাছের এত দাম

 

জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়লে সেটা যে মাছই হোক না কেন, তাদের জন্য সেটা অমূল্য। তবে যদি কোনোভাবে ঘোল মাছ বা সি গোল্ড ধরা পড়ে জালে, তবে সেদিন কপাল খুলে যায় জেলেদের। এই মাছে ভাগ্য বদলেছে অনেক জেলেরই।

 

এমনটা শুনে আসছি বরাবরই। কিন্তু এই সমুদ্রের স্বর্ণ বলা মাছের কেন এত চাহিদা সেটা হয়তো আমাদের অনেকেরই অজানা। এই ‘সি গোল্ড’ মাছ কোটি টাকায় নিলাম হয়। দেখতে খুবই সাধারণ মাছের মতো হলেও মুখের দিকে সোনালি আভা রয়েছে মাছটির।

 

বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘প্রোটোনিবিয়া ডায়াকানথুস’। ইন্দোনেশিয়া, তাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া— এই সব দেশে এই মাছের চাহিদা খুব বেশি।

এই মাছের ঔষধি গুণ থাকাতেই এর মূল্য এত বেশি। মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ওষুধ উৎপাদন সংস্থাগুলি এই মাছ কিনে নেয়। তারপর এর দেহের প্রায় প্রতিটি অংশ দিয়েই তৈরি হয় ওষুধ। এই মাছের বায়ু পটকা দিয়ে কিডনির নানা রোগ নিরাময়ের ওষুধ তৈরি হয়।

 

বিশেষ করে কিডনিতে পাথর জমলে, তা দূর করতে নাকি দারুণ উপকারী ঘোল মাছের পটকা থেকে উৎপন্ন ওষুধ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ওই মাছের হৃদয়। যে কারণে এ হৃদয়কে ‘সোনার হৃদয়’ও বলা হয়।

মাছের পাখনাও ফেলে দেওয়া যায় না। পাখনা দিয়েও নানা ওষুধ তৈরি হয় এবং দামি মদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ, ভিটামিন রয়েছে এই সামুদ্রিক মাছে। অস্ত্রোপচারের পর দেহের সঙ্গে মিশে যাওয়া সেলাইয়ের সুতো তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় এই মাছের শরীরের অংশ।

এই মাছের দাম নির্ভর করে এর ওজন এবং মাছটি পুরুষ না স্ত্রী, তার ওপর। একটি ৩০ কেজির পুরুষ ঘোলের দাম অন্তত চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।

অন্যদিকে, ওই ওজনের একটি স্ত্রী ঘোলের দাম অনেকটাই কম হয়। এক থেকে দু’লাখ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করে। দেহের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আকার এবং কতটা পুরু তার ওপরও নির্ভর করে দাম।

পাঠকের মতামত: