কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কৃষিমন্ত্রীর পরামর্শের আগেই ভাত খাওয়া কমিয়েছে দেশবাসী

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বাংলাদেশের মানুষ দ্বিগুণ ভাত খায় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি চালের চাহিদা কমাতে ভাত কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এই নিয়ে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তবে পরিসংখ্যান ব্যুরোরর (বিবিএস) মতে দেশের মানুষ ব্যয় কমাতে খাদ্যগ্রহণ কমিয়ে দিছেয়ে আরও আগে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে ভাত খাওয়া।

দৈনিক ৫০ গ্রাম ভাত খাওয়া কমেছে

রবিবার (২৪ অক্টোবর) কৃষিমন্ত্রী এক অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশে জনপ্রতি গড়ে চাল খাওয়ার পরিমাণ প্রায় ৪০০ গ্রাম। বাংলাদেশের মানুষ কেন বেশি ভাত খায়?

 

তবে পরিসংখ্যান ব্যুরোর মতে জনপ্রতি ৪১৬ গ্রাম চাল ২০১০ সালে গ্রহণ করত এ দেশের জনগন। কিন্তু ২০১৬ সালে আয় ও ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখতে সেই চাল গ্রহণের পরিমাণ ৩৬৭ গ্রামে চলে আসে। অর্থাৎ প্রায় ৫০ গ্রাম চাল কম গ্রহণ করছে। আর করোনা মহামারীর সময়ে ব্রাকের গবেষণা মতে এর পরিমান আরও কম প্রায় ৩১০ গ্রাম।

শুধু ভাতই নয় বরং অন্যান্য খাদ্য গ্রহণের পরিমানও কম হয়েছে। পূর্বে দৈনিক ১০০০ গ্রাম খাদ্য গ্রহণ করলেও তা কমে ৯৭৫ গ্রাম হয়। এর মধ্যে আলু,দুধ,চিনি,ফলসহ অন্যান্য পুষ্টিকর পণ্যগ্রহণ কমেছে।

ভাত খাওয়া কমালে ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাবে

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. সাত্তার মন্ডল বলেন, তুলনামূলক ভাবে প্রধান খাদ্য হিসেবে চালের দাম কম। যার ফলে দরিদ্ররা ভাত খাওয়ায় নির্ভরশীল। কিন্তু ভাত খাওয়া কমিয়ে দিলে তার বিপরীতে অন্য খাদ্যপণ্য গ্রহণ করতে হবে। যা চালের চেয়ে ব্যয়বহুল। তাই সার্বিক পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের খাদ্যভাসে ভাত না থাকলে ব্যয় আরও বৃদ্ধি পেত।

 

আবহাওয়াগত কারনে ভাত গ্রহণ বেশি

ফরায়েজি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ রুবাইয়া রীতি বলছেন, প্রধান খাবার আবহাওয়া ও প্রাপ্তির ওপর নির্ভর করে। একসময় ভাতে মাছে বাঙালী থাকলেও মাছ প্রাপ্তি কম থাকায় মাছ গ্রহণ কমে গিয়েছে। কিন্তু প্রধান ফসল ধান যেহেতু তাই চাইলেই ভাত খাওয়া কমানো যায় না।

তিনি আরও বলেন, প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠিরা ভাত বেশি খায়। এজন্য এটাকে সুপার ফুড বলে। ভাত শরীরে প্রচুর এনার্জি দেয়। বেশিক্ষণ পেট ভরা থাকে। গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখে।

স্বল্প মূল্যে ভাতে পুষ্টি মেটায়

বাংলাদেশে এখনও দুই কোটি ১০ লাখ মানুষ অর্থাৎ প্রতি আটজনের মধ্যে একজনের পুষ্টিকর খাবার জোগাড়ের ক্ষমতা নেই।

খাদ্যগ্রহণের তালিকা অনুসারে দেখা যায় যে, ভাত ব্যতিত অন্য খাদ্যগ্রহণের পরিমান ৬৩৩ গ্রাম। যার বাজারমূল্য প্রায় ১২০ টাকা। সমপরিমান চালের মূল্য ৩৫ টাকা। যার ফলে এখনও বাড়তি দরেও ভাতই প্রধান খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: