কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ডিজেলের দামে বাড়ল জনগণের ভোগান্তি

  • দ্রব্যমূল্য থেকে পরিবহন ব্যয়- জনজীবনের সর্বত্র জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ডিজেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে আজ শুক্রবার ভোর থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে পণ্যবাহী যানবাহনের ধর্মঘট। আর ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিকরা। পরিবহন বন্ধ হওয়ায় সারাদেশে সৃষ্টি হতে যাচ্ছে অচলাবস্থা।

গত বুধবার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রতি লিটার ৮০ টাকা করেছে সরকার। বাংলাদেশে ব্যবহূত জ্বালানির দুই-তৃতীয়াংশই ডিজেল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু পরিবহন নয়, কৃষি ও ব্যবসাতেও বিরূপ প্রভাব পড়বে। ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের দামে আরও গতি আনবে ডিজেলের নতুন দাম। কৃষি ও কলকারখানার উৎপাদন খরচ বাড়বে। রপ্তানিতেও বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। দাম বৃদ্ধির প্রত্যক্ষ প্রভাব গতকালই দেখা দিয়েছে পরিবহন খাতে। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বাসের ভাড়া বেড়েছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ৩৬ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা নেওয়া হয়। জিগাতলা থেকে রামপুরা রুটের বাসে ১০ বাড়িয়ে ৪০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়।

চালক কবির হোসেন জানালেন, তার বাস ডিজেলে চলে। এখন তার দৈনিক খরচ এক হাজার টাকা বেড়েছে। ভাড়া না বাড়িয়ে উপায় কী? যাত্রী আরিফুর রহমান বলেন, ১০ টাকা ভাড়া বাড়লে মাসে তার খরচ বাড়বে ৫০০ টাকা। এই টাকা তিনি কোথায় পাবেন?
ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে গতকাল বিকেল থেকেই রাজধানীতে বাস চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। অফিস শেষে ঘরমুখো মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। হেঁটে, বাড়তি ভাড়ায় রিকশায় কিংবা অটোরিকশায় তাদের বাসায় ফিরতে হয়েছে।

এদিকে, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করেছে। পরিবহন ধর্মঘটে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি। দলগুলো বলেছে, গত সাত-আট বছর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম থাকলেও তখন দেশে জ্বালানির মূল্য হ্রাস করেনি সরকার। ৪০-৫০ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। সেই লাভের টাকা কোথায়?

দাম বৃদ্ধির কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে পণ্যবাহী যানবাহনের মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো থেকে। এসব সংগঠনের শীর্ষ নেতারা সরকার সমর্থক কিংবা সরকারি দলের পদধারী হলেও সরাসরি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও ধর্মঘটের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেছেন, ‘মালিকরা গাড়ি বন্ধ রাখলে শ্রমিকরা কী করে চালাবে?’

তবে পণ্যবাহী সমিতির তুলনায় নমনীয় সরকার সমর্থক বাস মালিকদের সংগঠন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি গতকাল দুপুরেই বাস ভাড়া বৃদ্ধির আবেদন করে চিঠি দেয় সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছে। তবে বিভিন্ন জেলা-উপজেলার সমিতিগুলো সরাসরি বাস বন্ধের ডাক দিয়েছে।

পাঠকের মতামত: