কক্সবাজার, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে অবরোধ, বাস-শাটল ট্রেন বন্ধ

কমিটি ঘোষণার পর পদ বাণিজ্য ও অছাত্রদের রাখার অভিযোগে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পদবঞ্চিতরা।

দুই সদস্যের কমিটি গঠনের তিন বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে কমিটি ঘোষণার পর পদ বাণিজ্য ও অছাত্রদের রাখার অভিযোগে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পদবঞ্চিতরা। পরবর্তীতে তারা কমিটি পুনর্বিন্যাসের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয়। ফলে কার্যত অচল হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

রোববার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ৬৯ জন সহসভাপতি, ১২ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১১ জন সাংগঠনিক সম্পাদক রাখা হয়েছে।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই চবি ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে সভাপতি করা হয় রেজাউল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় ইকবাল হোসেন টিপুকে।

পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর কমিটি পুনর্গঠনের দাবিতে অবরোধের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। এ সময় ক্যাম্পাসের সোহরাওয়ার্দী হল মোড়ে বিক্ষোভ শুরু করে শাখা ছাত্রলীগের উপ-গ্রুপ বিজয়ের পদবঞ্চিত নেতা কর্মীরা। এরপর রাত দেড়টায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা দেন বিজয় গ্রুপের নেতা কর্মীরা। এদিকে অবরোধের কারণে ক্যাম্পাস থেকে নগরীর উদ্দেশ্যে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কোন বাস ছেড়ে যায়নি। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনও আটকে দেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনরত নেতা কর্মীদের দাবি, বিজয় গ্রুপের আরেক নেতা ও কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া মো. ইলিয়াসকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে।

পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহসভাপতি পদ পাওয়া বিজয় গ্রুপের নেতা নজরুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘এখানে অসংখ্য ত্যাগী, পরিশ্রমী যোগ্য ছেলেরা কমিটিতে বাদ পড়ছে। ওরা ওদের মূল্যায়নের দাবিতে অবরোধের ডাক দিয়েছে।’

সবুজ অভিযোগ করেন, ‘ইলিয়াস টাকার মাধ্যমে এখানে এমনও ছেলেকে নেতা বানাইছে যারা কখনো রাজনীতি করে নাই। তাই আমাদের ছেলেরা অবরোধের ডাক দিয়েছে।’

বিজয় গ্রুপের আরেক কর্মী মোহম্মদ দেলোয়ার বলেন, ‘চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী ইলিয়াস এ কমিটিতে অছাত্র, জামায়াত শিবির, বিএনপি ব্যাকগ্রাউন্ডের অনেককে কমিটিতে এনেছে। আমরা যারা ৭ বছর ধরে ত্যাগ করেছি, তিনি আমাদের মূল্যায়ন করেননি। যতক্ষণ পর্যন্ত ইলিয়াসকে বহিষ্কার ও কমিটিকে পুনর্গঠন করা হবে না আমরা অবরোধ চালিয়ে যাব।’

বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মহিউদ্দিন সুমন জানান, ‘কর্মীরা পদ বঞ্চিত হয়ে ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াসের বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে। আমরা সেখানে অবস্থান করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক এস এম মোয়াজ্জম হোসেন বলেন, ‘অবরোধের কারণে পরিবহন পুল থেকে কোন বাস বের হতে পারেনি।’

ষোলোশহর রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে ছাড়ার পর ঝাউতলা স্টেশন আটকে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা।’

পাঠকের মতামত: