কক্সবাজার, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

ফটোসেশনবন্দী কৃষকের কষ্ট!

*ধান কাটতে এক জন ছবি তুলতে ১০ জন

*নেতাদের কান্ডে বিরক্ত কৃষক, হয়রানীর অভিযোগ
*প্রশংসিত ছাত্রলীগ সমালোচিত আ.লীগ
*জনসেবার নামে তামাশা চলছে: আবুল মকসুদ
*কৃষকের উপকারের চেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে: বদিউল আলম মজুমদার
*মিথ্যা ফটোসেশন বন্ধ করে কৃষকের কাছে ক্ষমা চান: ডাকসু ভিপি

আমগো দেহার কেউ নাই। নেতারা আহে কাচি কাইড়া নিয়া ধানে হাত লাগায়া ছবি তুইলা যায়গা। তাদের কাম ঠিকই অয়, কিন্তু আমগো যে ক্ষতি হয়, হেইডা দেখবো কেডা। হেরা ধানগুলা যে ক্ষেত ভইরা ছিডায়া রাইখা যায়, হেইডা গুছাবো কেডা।’ এমনভাবেই নিজের মনের ক্ষোভ জানাচ্ছিলেন রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ধানী জমির মালিক আবদুল মোমেন।

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জেলা, শহর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। ভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে যখন ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে ঠিক তখনই কৃষি নির্ভর দেশে ধান কাঠার মৌসুম শুরু হয়েছে। ফলে ভয়াবহ শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। সারাদেশে পাকা বোরো ধান কাটার জন্য পাওয়া যাচ্ছেনা শ্রমিক। করোনার কারনে ঘরবন্দি রয়েছেন কালমা খাটা কৃষকরাও।

ফলে কামলার অভাবে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে চাষীদের ধান। শ্রমিক সংকটে পাকা ধান কাটতে না পেরে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন হাজারো কৃষক। এমন অবস্থায় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাঠানোর ব্যবস্থা করলেও সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

তাই এই দুর্যোগে কৃষকদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। স্বেচ্ছাশ্রমেই কেটে দিচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ধান। শুধু স্বেচ্ছেসবী সংগঠনই নয় দুঃসময়ে শ্রমিক সংকটে পড়া কৃষকের পাশে দাড়িয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মী,ছাত্র, শিক্ষক, এমপি, মন্ত্রী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।

ইতোমধ্যে স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগের নেতৃবৃন্দের কৃষকের ধান কেটে দেয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের লোকজন কৃষকের ধান কাটার জন্য মাঠে নামলেও কৃষকদের অভিযোগ ওইসব নেতাকর্মীরা ধান কাটতে গিয়ে উল্টো তাদের ফসলের চরম ক্ষতিধাসন করছে। একজন নেতা ধান কাটতে গেলে সাথে ১০ জন যাচ্ছেন ছবি তুলতে। আবার ক্ষেতে বসেই মোবাইলে লাইভ দিতে ও ছবি তুলতে গিয়ে নষ্ট করছেন ফসল।

অভিযোগ উঠেছে, বেশকিছু জায়গায় কৃষকের ধান কাটার নামে নিছক ফটোসেশন করেছে নেতাকর্মীরা। ধান কাটার নামে পায়ে মুড়ে নষ্ট করেছে কৃষকের পাকা ধান। নেতানেত্রীরা ধানকাটার নামে ছবি তুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিকৃয়া দেখিয়েছে বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা। প্রকাশ করেছেন বিরক্তিও।

নেতারা ধান কাটছেন পাঞ্জাবি, স্যুট, টাই, নতুন শার্ট, প্যান্ট, বেল্ট পরে। কেউ কেউ অফিসের পোশোকেও ধান কেটে বা ২-১ আটি ধান মাথায় নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছবি প্রকাশ করছে।

পুরষের পাশাপাশি কিছু নারী নেত্রীও ধান কাটতে মাঠে নেমেছেন। এমনকি ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের ফটোসেশনসহ ধান নষ্ট করার প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

এমন অবস্থায় বিশ্লেষকেরা বলছেন, দুর্যোগে যারা কৃষকদের পাশে দাড়িয়েছে তাদের সাদুবাদ জানাই। তবে যারা সাহায্যের নামে শুধুই লোক দেখানো ফটোসেশন করেছেন। তারা কৃষকের সাথে প্রতারনা করেছেন।

এজন্য তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। নেতারা সংকটে পড়া কৃষকের পাশে দাড়িয়েছে ভাল কথা কিন্তু কাউকে উপকার করে সেটা প্রকাশ করলে সেটার কোন মুল্যে থাকে না।

কিছু এলাকায় ফটোসেশন নয় ছাত্রলীগের নেতার প্রকৃতপক্ষেই কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছেন। তাদের থেকেই অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের শেখা উচিত বলে মনে করেন এই বিশ্লেষকেরা।

জানা গেছে, ছাত্রলীগের ধান কাটা কর্মসূচি প্রশংসিত হওয়ায় কিছু এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রী রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে দলবল নিয়ে বিভিন্ন ধান খেতে গিয়ে ধান কেটে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিচ্ছেন। অনেক স্থানীয় পত্রিকা ও কিছু অনলাইন এ ছবিগুলো প্রকাশও করছে।

এভাবে নামিদামি ব্যক্তিদের কান্ডকীর্তি কৃষকদের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। এমনকি আওয়ামী লীগের ভিতরেও সমালোচনা হচ্ছে। অনেকে বলছেন, এভাবে বিতর্ক সৃষ্টির কোনো মানে নেই। ছাত্রলীগ প্রথমে সঠিকভাবে মাঠে গিয়ে কাজ করেছিল, যা প্রধানমন্ত্রী নিজেও প্রশংসা করেছেন।

এছাড়াও গণমাধ্যমও ছাত্রলীগের প্রশংসা করে সংবাদ পরিবেশনও হয়েছে। এ বিষয়টি দেখার পরে অনেক রাজনীতিবিদ, এমপি ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ধান কাটার ছবি তুলে ফেসবুকে দিতে শুরু করেছেন। ঢাকার কিছু নায়িকাকেও এ ধরনের কাজ করতে দেখা গেছে।

এদিকে গত রবিবার (২৬ এপ্রিল) গনমাধ্যমে উঠে আসে রাজবাড়ী জেলার কৃষকলীগের ধান কেটে লোক দেখানো ফটোসেশনের চিত্র। এতে স্থানীয় কৃষকরা নেতাদের উপর ক্ষুব্ধ হয়। শুধু রাজবাড়িই নয় সারাদেশে নেতাকর্মীদের ধান কাটার ফটোসেশন নিয়ে বেশ কয়কদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।

এর মধ্যে গতকাল কৃষকের কাচা ধান কেটে সমালোচনার স্বীকার হন টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান মনির।তিনি স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কাটেন কৃষকের কাচা ধান। পরে সেই ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

পরে এ বিষয়ে সংসদ সদস্য তানভীর হাসান মনির বলেন, আমি মূলত পাকা ধান কেটেছি। তবে কিছু লোক স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছেন কাঁচা ধান কাটা হয়েছে এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও গুজব।

এদিকে ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, ধান কেটে সাহায্য করতে অনেকে আসছে কিন্তু তারা ১০-২০ ধান কেটে ছবি তুলেই চলে যাচ্ছে। মূলত ধান ক্ষেতে ছবি তোলার পরপরই ধান কাটার শ্রমিকরা উধাও হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার জোর করে কাস্তে কেড়ে নিয়ে শ্রমিকদের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে।

নেতাকর্মীদের ফটোসেশনের জন্য কৃষকদের শ্রমিকের ঘন্টার পর ঘন্টা বেকার বসে থাকবে বলেও অভিযোগ করেন। এতে তার উপকারের চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন।

জানা যায়, গত বছর টাঙ্গাইলের কালিহাতির এক কৃষক পাকা ধান ঘরে তুলতে না পারার ক্ষোভ এবং হতাশায় ফসলের মাঠে আগুন দিয়েছিলেন। এরপর সেই কৃষকের ধান কেটে দেন স্থানীয় কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।

মূলত তখন থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ধান কাটা এবং সেটির প্রচারণা করার প্রবণতা বাড়তে থাকে। প্রচারনার জন্য নেতাদের মাঝেমধ্যে কৃষকের কাচা ধানও কাটতে দেখা যায়।

ধান কাটা নাকি ফটোসেশন এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কেউ যদি স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকের ধান কেটে দেয় আমি সেটার পক্ষে আছি।

কিন্তু ধান কাটার নামে ফটোসেশনের পক্ষে আমি নেই। সবাই যে শুধু ছবি তোলার জন্য ধান কাটতে যাচ্ছে তা কিন্তু নয়। কিছু মানুষ আছে যারা সত্যিকারভাবেই কৃষকের সহায়তা করছেন। তবে কৃষকের উপকার করতে গিয়ে উল্টো ছবি তুলে কৃষকের ফসলের ক্ষতি করা দুঃখজনক। আশা করে নেতারা এদিকে খেয়াল রাখবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ডাকসু ভিপি নুরুল নক নুর বলেন, একজন ধানকাটা শ্রমিক যেভাবে ধান কাটতে পারে, আপনি আমি সেভাবে পারবো না। আমরা ধান কাটতে গিয়ে হাঁপিয়ে মরবো, হাত কাটবো অথবা ১ ঘণ্টা মাঠে ঘুরে ফটোসেশন করে চলে আসবো।

আর এখন মুলত তাই হচ্ছে। ধান কাটতে অভ্যাস লাগে। একজন শ্রমিক যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে পারে না, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তেমন ধান কাটতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ধান কাটতে গেলে ৩০ মিনিট পর আর কাটতে পারবেন না।

আর আরও বেশি পারলে ১-২ ঘণ্টা। এর বেশি পারবে না। তাই ধান কাটার নামে এসব ফটোসেশন বন্ধ করে পারলে কৃষককে শ্রমিক কিনতে টাকা দিয়ে সহায়তা করুন। নেতাদের উদ্দ্যেশ্যে ডাকসু ভিপি বলেন, অনেক নাটক মঞ্চস্থ করেছেন এবার এসব ছাড়ুন। মিথ্যা ফটোসেশন বন্ধ করে কৃষকের কাছে ক্ষমা চান।

এ বিষয়ে নিজস্ব মতামত তুলে ধরে বিশিষ্ট কলামিস্ট ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, জনপ্রতিনিধিদের এ ধরনের কাজে আমরা হতবাক। এমন দুর্যোগের দিনে তাদের কান্ডজ্ঞানহীন কাজের নিন্দা জানানোরও রুচি হয় না। জনসেবার নামে তামাশা চলছে। তামাশা দেখছি কৃষকের ধান কাটা নিয়েও। জনসেবার নামে লোকদেখানো তামাশা জাতির বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। তা উপলব্ধি করার ক্ষমতা তারা হারিয়ে ফেলেছেন।

সারাদেশে ধান কাটার নামে ফটোসেশনের কিছু চিত্র তুলে ধরা হলো:

নেত্রকোণার কেন্দুয়া এলাকায় ধানকাটার ফটোসেশন করেছেন কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক অপু উকিল। তার স্বামী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দুয়া-আটপাড়া থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য অসিম কুমার উকিল। তাদের ধানকাটার ছবির ফটোসেশন নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় বইছে সমালোচনার ঝড়।

গত ২৬ এপ্রিল রাজবাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলায় কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী হকসহ নেতাকর্মী বিরুদ্ধে কৃষকের ধান কাটার নামে ফটোসেশন করা ধানের ক্ষতি করার অভিযোগ ওঠে।

এ বিষয়ে কৃষক আবদুল মোমেনের স্ত্রী আসমা বেগম অভিযোগ করেন, নেতারা ২০-২৫ জন লোক এসে অনেকক্ষণ সময় নিয়ে ধানক্ষেতে ছবি তুলতে থাকে।

এতে তাদের পায়ের তলায় পড়ে ক্ষেতের অনেক ধান নষ্ট হয়ে যায়। তারা জোর করে কাচি কেড়ে নিয়ে ধান কাটতে থাকে অভিজ্ঞতা তাদের না থাকায় আমাদের ব্যাপক পরিমাণ ধান পানির মধ্যে পড়ে যায়।

পরে তারা যাওয়ার পর ভাড়া করা আটজন কৃষক দিয়ে সেই ধান কুড়াতে হয়। তারা আমাদের ভাড়া করে আনা আটজন কৃষকের কাজ বন্ধ রেখে ধান কাটার নামে ফটোসেশন করে ধানক্ষেতের ক্ষতি করে।

গাজিপুর শ্রীপুর উপজেলায় বুধবার (২২ এপ্রিল) উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি কবীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আইনুল হাসানের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বলদিঘাট (রসুলপুর) এলাকায় ধান কাটার নামে উৎসব ও খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজনে করে।

জানা যায়, সকাল সাড়ে দশটার দিকে কৃষক লীগের সদস্যরা মোটরসাইকেল নিয়ে প্রথমে ধান ক্ষেতে যায় পরে সকলেই জামা কাপড় পরিবর্তন করে। ক্ষেতে কাজ করতে থাকা কৃষকদের কাছ থেকে কাঁচি নিয়ে সকলেই ধান কাটার জন্য প্রস্তুতি নেয়।

এবং কিছু সময় ধান কাটে ও ছবি ফটোসেশন করে। ক্ষেতের কৃষকেরা অভিযোগ করে বলেন, তারা মূলত ধান কাটার অভিনয় করে ছবি তুলে চলে যায়। তারা কৃষকদের ধান কাটায় কোন সহায়তা করেননি।

নওগাঁর আত্রাইয়ে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে শ্রমিক সংকটে পড়ায় কৃষকের ধান কেটে ছবি তুলে ধান নষ্ট করার অভিযোগ পাওয়া যায়। নেতারা কৃষকের জমির পাকা ধান কাটতে গিয়ে এ কান্ড ঘটান উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা।

ইতোমধ্যে ধান কাটার নামে ছবি তোলার হিড়িক নিয়ে সচেতন নাগরিকরা অনেকে প্রশ্নও তুলছেন।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা তার ব্যাক্তিগত ফেসবুকে লিখেছেন- কাঁচা ধান কাটা হল সারা অশ্রুজলে দেখে কৃষক একেলা!

আক্ষেপ করে মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে লেখেন, একজনের ধান কাটার ছবি তুলতে গেলেন ১০ জন। ধানক্ষেতের যে বারোটা বাজালেন, এই ক্ষতিপূরণ করবে কে?

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক গাজী আলাউদ্দিন আহমদ তার ফেসবুকে লিখেছেন, ধান কাটা, এক‌টি উ‌দ্যোগ‌কে যেভা‌বে বিত‌র্কিত ক‌রে ‘উৎসব‌প্রিয়’ বাঙা‌লি!

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে এবার বোরো মৌসুমে সারাদেশে ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় এবার দুই কোটি ৪ লাখ টন চালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

সারাদেশে বোরো ধান কাটার সময় এখনো পুরোপুরি শুরু হয়নি। যারা আগাম কিছু বি-২৮ ধান লাগিয়েছেন, তারা এখন ধান কাটছেন। সারাদেশে ধান কাটার মৌসুম শুরু হতে এখনো ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে।

তবে হাওর অঞ্চলের আগাম ধান লাগানো হয় বিধায় এ ধান আগাম পাকে। দেশের হাওরবেষ্টিত সাত জেলায় বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার টন, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২০ ভাগ।আমার সংবাদ

পাঠকের মতামত: