কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

রেডজোন চিহ্নিত কক্সবাজারে লকডাউন নিশ্চিতকল্পে কঠোর অবস্থানে সেনাবাহিনী

আবুল কাসেম সাগর, রামু:: 

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কক্সবাজার পৌর এলাকাকে দেশের প্রথম ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে দ্বিতীয়বারের মতো লকডাউন করার পাশাপাশি আজ ৭ জুন বিকাল থেকে চকরিয়া উপজেলার পৌর এলাকা এবং উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ২, ৩, ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডকেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে।

রেডজোন ঘোষণাকৃত এলাকাসমূহের প্রধান সড়কগুলোতে সেনা চেকপোষ্ট স্থাপনের পাশাপাশি সেনা টহল কার্যক্রম বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়েছে। রামু সেনানিবাস সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় “রেড জোন” হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলো পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ থাকবে। তবে অতি জরুরি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা তাদের কাজের যথার্থতা প্রমাণ সাপেক্ষে ‘’রেডজোনে’’ সীমিত পরিসরে আসা যাওয়া করতে পারবেন। এসকল এলাকায় সব ধরনের দোকান, মার্কেট, বাজার, হাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী রবিবার ও বৃহস্পতিবার কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু থাকবে।
অাবুল কাশেম সাগর,রামু ( কক্সবাজার)
সরেজমিনে আজ রবিবার কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর চেকপোষ্টে তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। সেনাসদস্যরা জরুরী প্রয়োজনে চলাচলরত ব্যক্তিদের আইডি কার্ড ও পরিচয় পত্র দেখে জিজ্ঞাসাবাদ সাপেক্ষে তাদেরকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের অনুমতি দিচ্ছেন। গতকালও ছোটখাটো কিছু যানবাহন যেমন টমটম, ইজিবাইক, অটোরিক্সা চলাচল করছিল। কিন্তু আজ সকাল থেকে সেগুলোও তেমন চলছে না। গতদিনের মতো মানুষজনও নেই বললে চলে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। সকালে পর্যটন শহরের লাবণী পয়েন্ট থেকে হলিডে মোড় হয়ে বাজারঘাটা ঘুরে ফাঁকাচিত্র দেখা গেছে। শুধু মূল সড়ক নয়, উপসড়কগুলো আটকে দেয়া হয়েছে। যাতে ওখান দিয়েও কোন যানবাহন চলাচল করতে না পারে। মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রিত করতে শহরের বিভিন্ন স্পটে রয়েছে সেনাসদস্যরা। মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার দেখলেই থামাচ্ছেন তারা। জানতে চাচ্ছেন কেন বের হয়েছেন, কোথায় যাচ্ছেন? সদুত্তর না মিললেই সেনাসদস্যরা তাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছেন।

অপরদিকে কক্সবাজারের প্রবেশমুখ লোহাগাড়া-চকরিয়া সীমানায় ইতিপূর্বেই সেনা সদস্যরা অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। জরুরি মালামাল নিয়ে আসা যানবাহনগুলোর গায়ে লেগে যেন করোনাভাইরাস জেলায় প্রবেশ না করতে পারে, সে কারণে গাড়িগুলোকে জীবাণুমুক্ত করে দিচ্ছে সেনাবাহিনী। এ লক্ষ্যে শহরের প্রবেশদ্বারে বিশেষায়িত একটি বুথ নির্মাণ করেছেন তারা নিজস্ব উদ্ভাবনী সক্ষমতায়।

সেনাবাহিনী সূত্র জানায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিক নির্দেশনায় ‘আপনার সুস্থতাই আমাদের কাম্য’- এ প্রতিপাদ্যে সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের জন্য নির্ধারিত রেশনসামগ্রীর একাংশ বাঁচিয়ে প্রতিদিনই জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে খেটে খাওয়া, হতদরিদ্র, কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও বীজ বিতরণ কার্যক্রম করা হচ্ছে, এছাড়া ধারাবাহিকভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে ‘’সেনা বাজার’’।

খাবার সহায়তার পাশাপাশি কক্সবাজারের অনেক জায়গায় সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল ক্যাম্প পরিচালনা করা হচ্ছে। সেখানেও সেনা চিকিৎসক, নার্সসহ সেনাসদস্যরা করোনা মোকাবেলায় নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। লকডাউন পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি মানুষের নানাবিধ সংকট দূর করতেই সেনাবাহিনী এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানায় ওই সূত্র।

পাঠকের মতামত: