কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

উখিয়ায় জনদূর্ভোগ চরমে : কৃষকের বীজ ধান নষ্ট

বর্ষার শুরুতেই দু-দিনের বৃষ্টি খাল-বিল সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। উখিয়ার অলিতে-গলিতে অপরিকল্পিত বাসা-বাড়ি নির্মাণ, পানি নিস্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না রাখা, অপরিচ্ছন্ন রাস্তা-ঘাট ইত্যাদির ফলে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে ওঠেছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন গ্রাম।

শেখ পাড়ার রাকিব জানান, অপরিকল্পিত বাড়ি-ঘর নির্মাণের ফলে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। রেজু খালের মোহনায় পানি বাড়তে থাকায় পাশের গ্রাম সোনাইছড়ি এলাকায় থৈ থৈ করছে নিম্নাঞ্চল।

পালংখালী রহমতের বিল, ময়নাঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্প, হলদিয়া পালং গোরাইয়ারদ্বীপ, রত্না পালং চাকবৈঠা, ভালুকিয়া পালং, জালিয়া পালং উপকূলীয় অঞ্চল ও রাজা পালং এলাকায় পোষ্ট অফিসে পানি ঢুকে পড়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত সমাজ ব্যবস্থা জনদুর্ভোগ বাড়ায়। সত্যিকারের জনবান্ধব নেতার অভাবে আজ সব কিছু অপরিকল্পিত। নিয়মের ভেতর আমরা কেউ নেই। তাই আমাদের দুর্ভোগ বাড়ছে।

বুধবার ভোরবেলা থেকে বৃহস্পতিবার বেলা বারোটায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দিবা-রাত্রি একটানা বৃষ্টির কারণে ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ জনগণ ও নিম্ন-আয়ের মানুষগুলো।

সামাজিক স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন সূর্যোদয় সংঘের সাবেক সভাপতি নুরুল আলম জানান, ভারী বর্ষণের ফলে শিরডেবা এলাকায় আংশিক পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া নলবনিয়া, ঘাটিপাড়া, নাছির পাড়া, শিরডেবা, আফছার বাপের পাড়া, সর্দার পাড়া এলাকায় পানি ঢুকে রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই রকম বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পাহাড় ধ্বসে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশংকা রয়েছে।

কৃষক নুরুল হক বলেন, অতিরিক্ত পানির কারণে বীচ তলা তৈরি করতে না পারায় কৃষকের বীচ ধান নষ্ট হচ্ছে।

মৎস্য খামারি আলা উদ্দিন জানান, আমার মৎস্য খামারের চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পানিতে ভেসে গিয়ে অপুরনীয় ক্ষতি হয়েছে। হাকিম পাড়া, ময়না ঘোনা, মধুর ছড়াসহ অধিকাংশ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পাহাড়ের চূড়ায় রোহিঙ্গারা অবস্থান করায় নতুন করে এক অজানা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক রোহিঙ্গা।

জনপ্রতিনিধি মাহবুব আলম জানান, প্রতি বছর বর্ষায় উখিয়ায় কোথাও না কোথাও পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি ডুবে যায় ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট। করোনার কারণে উপজেলা প্রশাসন সর্বক্ষেত্রে নজরদারিতে রেখেছেন। পাহাড় ধ্বসের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে প্রশাসনের সাথে জনপ্রতিনিধিরাও এগিয়ে আসবেন।

শেখ রাকিব এই প্রতিনিধিকে জানান, রাজাপালং ইউনিয়নের ২নং ওয়র্ডের শেখ পাড়া গ্রামের একজন নিরহ ব্যাক্তি আমি। করোনা পরিস্থিতি কে কেন্দ্র করে তাদের জোর জবর দখল চালিয়ে যাচ্ছে। দুই দূর্বত্ত জয়নাল আবেদীন প্রকাশ ডাক্তার জয়নাল (৫৫) ও জালাল উদ্দিন (৪৫) উভয় পিতা- মৃত জাকের হোসেন আমার (রাকিব) এর বাড়ীর উত্তর-দক্ষিন পাশে ও পূর্ব পাশে মাটির বাধ তৈরী করে রাকিব’কে পানি বন্ধি করে রাখে। এর ফলে রাকিবের ফ্যামেলির লোকজন ও ছোট ছোট শিশুগণ ঘর হতে বের হতে পারছেন না এবং ঘর বন্ধি হয়ে পড়েছেন। তাদের মাটির বাধ তৈরী করার ফলে রাকিবের ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। তিনি এই ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

পাঠকের মতামত: