কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

আজ পবিত্র শবে মিরাজ

আজ পবিত্র শবে মিরাজ। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এ রাতে মহান আল্লাহ তা’য়ালার একান্ত সান্নিধ্য লাভ করেন। ইসলামের ইতিহাসে মিরাজের ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলিম উম্মাহ প্রতিবছর যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে মি’রাজুন্নবী উদযাপন করে থাকে। শব ফার্সি শব্দ, এর অর্থ রাত্রি। মিরাজ আররি শব্দ, এর অর্থ হচ্ছে ঊর্ধ্বগমনের সিঁড়ি।

সুতরাং শবে মিরাজ হচ্ছে মহানবীর ঊর্ধ্বগমনের সিঁড়ির রাত্রি, যে রাত্রিতে তিনি সশরীরে ঊর্ধ্বগমনে সপ্তম আসমান, বেহেশত, দোজখ প্রত্যক্ষ করে আল্লাহ পাকের অপার সান্নিধ্য লাভ করত; অতি অল্প সময়ে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। মি’রাজ সম্পন্ন হওয়া মহানবীর জীবনে সবচেয়ে বড় অলৌকিক ও ঐতিহাসিক ঘটনা। নবুয়্যতের ১০ম বছরে মহানবীর ৫০ বৎসর বয়সে আরবি রজব মাসের ২৭ তারিখের রাত্রে এ মহাঘটনা সংঘটিত হয় মর্মে ইসলামী চিন্তাবিদগণের ধারণা। রাসুলুল্লাহর চাচাতো বোন হযরত উম্মে হানীর ঘরে ইশা ও ফজরের নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে নবীজীর মি’রাজ সম্পন্ন হয়।

মক্কায় ইসলামের প্রকাশ্য দাওয়াত দেয়ায় জুলম-নির্যাতন তীব্র আকার ধারণ করলে নবীজী খুবই মর্মাহত হয়ে ওঠতেন আর এ দুঃসময়ে প্রিয়তমা স্ত্রী খাদীজাতুল কুবরা ও শ্রদ্ধাভাজন চাচা আবু তালিব তাঁকে সান্ত¡নার বাণী শুনাতেন। তারা উভয়ে মৃত্যুবরণ করলে তিনি বড়ই একা হয়ে পড়লেন। এমতাবস্থায় তিনি দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার জন্য নিজ গোলাম যায়িদকে সঙ্গে নিয়ে তায়িফ গমন করেন। সেখানে নবীজী নির্মম নির্যাতনের মুখোমুখি হলেন। তায়িফ ফেরত হলে আল্লাহ পাক তার পেয়ারা হাবীবকে প্রবোধ দেয়ার জন্য মি’রাজের মাধ্যমে সিদরাতুল মুনতাহায় ডেকে নেন।

নবীজীর মিরাজ আল্লাহর মহিমা ও কুদরাতের বহিঃপ্রকাশ। আল্লাহ পাক মিরাজের মাধ্যমে তার হাবীবকে উন্নত মর্যাদায় অভিষিক্ত করেন। মিরাজ রজনীতেই মুসলমানদের প্রধান ইবাদত  পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। তাই হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, ‘আস সালাতু মি’রাজুল মোমিনীন’- নামাজ মুমিনের মিরাজ স্বরূপ। মিরাজের সফরকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। মক্কার হারাম শরীফ থেকে ফিলিস্তিনের বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত সফর হচ্ছে ‘ইসরা’  আর বায়তুল মুকাদ্দাস হতে সরাসরি আকাশের পথে সপ্তম আসমান অতিক্রম করে সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য পর্যন্ত গমনকে মিরাজ বা ঊর্ধ্বগমন বলা হয়।

এ রাতে সাইয়েদুল মুরসালীন ও খাতেমুন্নাবীয়্যিন হযরত মুহাম্মদ (সা.) ফিলিস্তিনের বায়তুল মুকাদ্দাসে সকল নবী ও রাসুলের নামাজের জামায়াতে ইমামতি করেন।  সেখান থেকে জিব্রাঈল (আ.) কে সাথে নিয়ে  নবীজী দ্রুতযান বোরাকে সাওয়ার হয়ে একেক আসমানে একেক নবী-রাসূলের সাথে সাক্ষাত করে আরো ঊর্ধ্বপানে এগিয়ে যান। সপ্তম আসমানে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত আসলে ফিরিশতা জিব্রাইলের গতি থেমে যায়। তিনি আর অগ্রসর হতে পারলেন না। অসীম সত্ত্বার নির্দেশে নভো ভ্রমণে নবীজী একাই চললেন। এভাবে ‘বায়তুল মা’মুর’ উপনীত হলে সেখানে আল্লাহ পাকের দিদার লাভে সক্ষম হন এবং তার কুদরতের অজানা রহস্য সম্পর্কে  অনেক কিছু অবহিত হন।

পাঠকের মতামত: