কক্সবাজার, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ইয়াবা পাচারে এপিবিএন সদস্য!

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ইয়াবা পাচারকারীদের সহায়তাদানের। চার মাস আগে ইয়াবাসহ এপিবিএন’র একজন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এই বাহিনীর সদস্যদের আর কেউ এমন অপকর্মে জড়িত আছেন কিনা, সেটি খতিয়ে দেখার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১১ মার্চ নগরীর কাট্টলী এলাকা থেকে র‌্যাবের হাতে ২৭ হাজারেরও বেশি ইয়াবাসহ এক রোহিঙ্গা শরণার্থী ধরা পড়ে। সেসময় জিজ্ঞাসাবাদে জোবায়ের নামে ওই রোহিঙ্গা জানায়, এপিবিএন কনস্টেবল মিজানুর রহমান এক লাখ টাকার বিনিময়ে ইয়াবাগুলো কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছে দিয়েছে। র‌্যাবের হাতে যখন জোবায়ের ধরা পড়ে তখন তার পাশেই থাকা ওই কনস্টেবল কৌশলে পালিয়ে যায়। এপিবিএন কনস্টেবলের মাধ্যমে ইয়াবা পাচারের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন রোহিঙ্গা শরণার্থী জোবায়ের।

এরপর গত ১৫ মার্চ কনস্টেবল মিজানুরকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হলেও বিষয়টি জানাজানি হয়নি। মিজানুর বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। মিজানুর ছাড়াও একই ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই রোহিঙ্গা শরণার্থী হলো, কুতুপালং শরণার্থী দুই নম্বর সি ব্লকের মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জামতলা ক্যাম্পের জি ব্লকের নুর হাসিমের ছেলে মো. জুনায়েদ ওরফে ইউনুস। গ্রেপ্তার ১৪ এপিবিএনের কনস্টেবল মিজানুর রহমান (২৪) বগুড়ার শাহজাহানপুর থানার মৃত খান মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাকের ছেলে।

জানতে চাইলে এপিবিএন-১৪ এর সহ অধিনায়ক মাসুদুল হক জানান, কারো নিজের অপরাধের দায় প্রতিষ্ঠান নেবে না। কনস্টেবল মিজানের বিরুদ্ধে ইয়াবা পাচারে সহায়তার অভিযোগ উঠায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো কেউ এ ধরনের অনৈতিক কাজে জড়ালে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি আমরা নজরদারিতে রেখেছি।

জুবায়ের বলেন, ধরা পড়ার ৮/৯ দিন আগে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ইয়াবাগুলো জুনায়েদের কাছে পৌঁছে দিতে ইয়াছিন তাকে দিয়েছিল। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি টিভি সেন্টার এলাকায় ইয়াছিন তাকে ইয়াবাগুলো দেন। জুবায়ের জানতে পারেন, কুতুপালং ক্যম্পে কর্মরত এপিবিএনের গাড়ি চালক কনস্টেবল মিজানুর রহমান টাকা পেলে ইয়াবা পৌঁছে দেয়। যোগাযোগ করলে তিনি এক লাখ টাকা দিলে ইয়াবাগুলো চট্টগ্রামে পৌঁছে দিতে রাজী হন।

জবানবন্দিতে জুবায়ের বলেন, ইয়াবাগুলো একটি ব্যাগে নিয়ে গত ১১ মার্চ সকাল সাড়ে নয়টায় মিজানসহ উখিয়া থেকে সী লাইন বাসে কক্সবাজার বাস টার্মিনালে আসে। সেখানে থেকে দুজনে মারসা বাসে উঠে আসে। ওই দিন (১১ মার্চ) বিকেল পাঁচটায় বাস থেকে দুজনে মুরাদপুর নামে। সেখান থেকে ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলে দুজনে সিটি গেটে পৌঁছে রোহিঙ্গা শরণার্থী জুনায়েদের জন্য অপেক্ষা করছিল।

এ সময় র‌্যাব এসে জুবায়েরকে আটক করলে পাশে থাকা এপিবিএন কনস্টেবল মিজনুর রহমান পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে রোহিঙ্গা শরণার্থী জুবায়েরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মিজানুরকে এপিবিএন-১৪এর সহ অধিনায়কের কার্যালয় থেকে এবং জুনায়েদকে পাঁচলাইশের স্টার পার্ক হোটেলের ৫০১ নম্বর রুম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সূত্র দৈনিক পূর্বকোণ

পাঠকের মতামত: