কক্সবাজার, শনিবার, ৪ মে ২০২৪

উখিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নামে অপপ্রচারকারী সেই প্রতারককে সাজা দিলো প্রশাসন

বনের জমি বিক্রি করে সে জমি দ্বিতীয়বার দখলে নিতে প্রশাসনকে ব্যবহারের হীনচেষ্টা করতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন প্রতারক রবিঅং চাকমা। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আইনে তিনমাসের সাজা দিয়েছে উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজ উদ্দিন। বুধবার দুপুরে এ সাজা দেন তিনি।

সাজার বিষয়ে নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, জাতির পিতার নাম ভাঙ্গিয়ে সরকারি খাস জমি ও বনবিভাগের জমি বিক্রি করে আসছে। ছবিযুক্ত ননজড়িশিয়াল স্টাম্পমূলে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু তিনি এসব তথ্য গোপন করে কিছু লোক বনবিভাগের জমি দখল করেছে বলে আমাদের খবর দেয়। বুধবার আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে চেংছড়ি এলাকায় যায়। মোবাইল টিম নিয়ে উচ্ছেদে গেলে ভিন্ন চিত্র দেখতে পায়। ভুল তথ্য দিয়ে বিক্রিত জমি দ্বিতীয়বার দখলে নিতে প্রশাসনকে ব্যবহারের হীনচেষ্টা করেছেন রবিঅং চাকমা। স্থানীয় লোকজন ননজুড়িশিয়াল স্টাম্পে বিক্রিত প্রমাণ পত্র আমাদের হাতে দিলে অভিযোগ তার বিপক্ষে যাওয়ায় মোবাইল টিমকে অসহযোগিতা করেন তিনি।

বনবিভাগের জমি দখল করে বিক্রি ও প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে ব্যবহারের অপচেষ্টা প্রমাণ পাওয়ার পর রবিঅং চাকমাকে আটক করা হয়। পরে ভ্রম্যামান আদালতের মাধ্যমে তাকে তিনটি ধারায় ৩ মাসের বিনাশ্রম সাজা দেয়া হয়৷

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে অপ-প্রচার চালিয়ে আসছে। যেখানে রবিঅং চাকমাও একজন। জেলা প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে প্রকৃত ইতিহাস গোপন করে জমি দখল করতে এমন অপ-প্রচার চালিয়ে যায় চক্রটি। প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে কয়েকটি পরিবারকে উচ্ছেদ করে উক্ত জমি দখলে নেয় রবিঅং চাকমা চক্র। এছাড়া আশেপাশে সরকারি জমিতে বসবাসরত স্থানীয়দের উচ্ছেদ করতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন। উচ্ছেদ না করার শর্তে চাঁদা দাবি করে অনেকের কাছে। বুধবার প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে চেংছড়িতে নিয়ে যায়। প্রশাসন মোবাইল কোর্ট নিয়ে চেংছড়িতে গেলে বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। সরকারি খাস জমি ও বনবিভাগের জমি নন জুড়িশিয়াল স্টাম্প মূলে বিক্রি করেছেন রবিঅং। এসব জমি দ্বিতীয়বার দখলে নিতে প্রশাসনকে ব্যবহার করছেন তিনি। বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থল থেকে রবিঅংকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালত।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন বলেন, শুধুমাত্র জমি দখলের অসৎ উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুর নামে মিথ্যা ইতিহাস রচনা করেছে রবিঅং গ্যং। জেলা প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে এলাকায় বসবাসরত লোকদের উচ্ছেদের হীনচেষ্টা চালিয়ে আসছে। বুধবারও এমন ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় লোকজন তার অপকর্ম ও সরকারি জমি বিক্রির বিষয়টি এসিল্যান্ড স্যারকে জানানোর পর তকে আটক করে নিয়ে যায়।

জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহম্মদ বলেন, রবিঅং চাকমা কখনো নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা, কখনো জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি আবার কখনো মুক্তিযোদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর সংরক্ষণ কমিটির সদস্য দাবি করে মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছে। তাকে টাকা না দিলে প্রশাসন দিয়ে বসতি উচ্ছেদের হুমকি দিতো নিয়মিত। রহস্যজনক কারণে তাকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। উল্টো স্থানীয়দের নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমরা প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

ভোক্তভূগী আলতাফ বলেন, বুধবার হঠাৎ করে এসিল্যান্ড আমাদের এলাকায় আসেন আমাদের উচ্ছেদ করতে। আমরা স্যারকে রবিঅং চাকমা কর্তৃক নন জড়িশিয়াল স্টাম্পে বিক্রয়ের প্রমাণ দেখালে রহস্য বুঝতে পেরে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যান এসিল্যান্ড মহোদয়।

পাঠকের মতামত: